Sunday, January 27, 2019

পাখির চোখে ইনফেকশন এবং প্রদাহজনিত সমস্যা

বিভিন্ন কারণে পাখির চোখে ইনফেকশন হতে পারে, যেমন  – আঘাতজনিত কারণে, জীবানু সংক্রমনে, নোংরা পরিবেশ এর কারণে, খাচার বিভিন্ন জিনিস পত্র মানসম্মত না হলে, খাচা অতিরিক্ত পুরানো বা জং ধরা হলে, পাখির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলে। ইনফেকশন এবং প্রদাহজনিত সমস্যার উপসর্গ গুলো সারারণত – চোখ ফুলে যাওয়া, চোখ এর রং লালচে হয়ে যাওয়া, চোখ থেকে পানি পরা, চোখ থেকে রক্ত পরা, চোখ বেশিরভাগ সময় বন্ধ করে রাখা, চোখে ময়লা জমে থাকা – ইত্যাদি। এরকম দেখা গেলে দ্রুত চিকিত্সা শুরু করতে হবে কেননা এধরনের সমস্যায় সঠিক সময়ে সঠিক চিকিত্সা না করা হলে পাখি মারাjawa তা খুব ই স্বাভাবিক। এধরনের সমস্যায় প্রাকৃতিক চিকিত্সা খুব ই কার্যকর তবে তা অবশ্যই সঠিক পদ্ধতিতে করতে হবে। মেডি সিনাল চিকিত্সা না করাই ভালো কেননা পাখির চোখ খুব ই  স্পর্শকাতর এবং আমাদের দেশে পাখির চোখের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ & কার্যকর কোনো এভিয়ান মেডিসিন পাওয়া যায় না। ভেটেরিনারি আই-ড্রপ অথবা মানুষের আই-ড্রপ পাখির ক্ষেত্রে কোনো কোনো সময় সাময়িক ভাবে কাজ করলেও এটা থেকে বিভিন্ন বিপদ হবার রিস্ক আছে, পরবর্তিতে সমস্যা ফিরে আসার সম্ভাবনা আছে এবং পাখির চোখ নষ্ট হয়ে যাবার ও আশংকা আছে। নিম্নোক্ত চিকিত্সাবিধি অনুসরণ করলে পাখি অবশ্যই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে এবং কোনো রিস্ক ও থাকবে না -

১। এধরনের সমস্যা দেখা মাত্র প্রথমেই নিম পাতা সিদ্ধ পানি  দিয়ে পাখির চোখ হালকা করে ধুয়ে দিন, পানিতে হাত ভিজিয়ে একটু দূর থেকে হালকা করে পানিটা ছোখে ছিটিয়ে দিবেন (পাখির চোখে স্প্রে করা যাবে না।)। এভাবে দিনে ৩-৫ বার দিবেন। দিনের বেলা একটা পাত্রে গোসলের জন্য নিম পাতা সিদ্ধ পানি দিন, পাখি নিজে থেকে গোসল করলে এমনিতে চোখ ধুয়ে যাবে। আঘাতজনিত কারণে চোখে ইনফেকশন হলে নিম পাতা সিদ্ধ পানি ব্যবহারের পর হালকা করে এক টুকরা এত ভেরা জেল ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিন, দিনে ৩ বার লাগাবেন পর পর ৩ দিন।#নিমের দ্রবনঃ ১৫ টি দেশী নিম পাতা ভালো করে ধুয়ে ১ লিটার পরিমাণ ফুটন্ত গরম পানিতে ছেড়ে দিন। এর পরে পাত্রটি ঢাকনি দিয়ে ঢেকে ১৫-২০ মিনিট ধরেহালকা আঁচে সিদ্ধ করুন। পানির রঙ হালকা সবুজাভ বাদামী হলে পাত্রটি চুলা থেকে নামিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢাকা অবস্থায় ঠাণ্ডা হতে দিন।
২। পাখি যেই খাচায় আছে, সেখান থেকে সরিয়ে খাঁচাটি ঘষে মেজে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে রোদ এ শুকান, এরপর পাখিকে সেই খাচায় রাখুন। খাচা যদি বেশি পুরানো বা জং ধরা হয় তাহলে খাচা অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।
৩। খাঁচার পার্চ/ বসার লাঠি পরবর্তন করে তাজা নিম এর ডাল এর পার্চ করে দিন। নিম এর ডাল এ এন্টিসেপটিক প্রপার্টিস আছে, তাই পাখি এখানে যখন চোখ ঘষবে, খুব দ্রুত চোখের ইনফেকশন/ প্রদাহ সেরে যেতে শুরু করবে।
 ৪। পাখিকে তাজা নিম এর ডাল পাতাসহ খেতে দিন। এটি ভেতর থেকে জীবানু ধ্বংস করতে সাহায্য করবে।
 ৫। ইনফেকশন বেশি গুরুতর হলে, চোখ বেশি  ফুলে গিয়ে থাকলে, চোখ থেকে বেশি পানি পড়লে ব্র্যাগ আপেল সাই ডার ভিনেগার পানিতে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। এতে করে ভেতর থেকে ইনফেকশন দ্রুত শর্তে শুরু করবে এবং পাখির ইমিউন সিস্টেম ও শক্তিশালী হবে, ফলে জীবানু সংক্রমণ রোধ হবে।এই ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ব্যবহার বিধি অনুসরণ করুন -
# বাজরিগার, ফিঞ্চ, ডাভ ও অন্যান্য ছোট পাখি –    ২৫০ মি.লি.  পানিতে ৫ মি.লি.  অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার, একটানা ৫ দিন।
# ইংলিশ বাজরিগার, ককাটেল, লাভবার্ড, কবুতর, টিয়া  ও অন্যান্য মাঝারি পাখি-    ২৫০ মি.লি.  পানিতে ১০ মি.লি.  অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার, একটানা ৫ দিন।
* সতর্কতা : অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার  প্রতিবার ব্যবহারের পূর্বে বোতলটি ঝাকিয়ে নিবেন এবং সুসংরক্ষণের জন্য নরমাল ফ্রিজে রাখুন। অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার ও পানির মিশ্রন ফ্রিজে রেখে পরবর্তিতে ব্যবহার করা যাবে না। অরিজিনাল বোতল এ রাখা সম্ভব না হলে অবশ্যই কাঁচের বোতল এ সংরক্ষণ করবেন । অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার অবশ্যই “BRAG” এর হতে হবে, নাহলে এই ক্ষেত্রে কোনো কাজ হবে না।
 ৬। প্রতিদিন কিছু সময়  পাখিকে রোদ এ রাখবেন -  গরম কালে ৫-১০ মিনিট এবং শীতকালে ৩০ মিনিট। এত পাখির যেকোনো জীবানু সক্রমন রোধে একান্ত প্রয়োজন।
৭। পাখিকে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়াবেন ( গ্রুপ এর ফাইল সেকশন এ পাখির খাবারের তালিকা মেনে চলুন), স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুন পরিমান সবুজ শাক সবজি  খাওয়াবেন। সবুজ শাকসব্জি চোখের  সু স্বাস্থ্য রক্ষায় অপরিহার্য।
৮। চিকিত্সা চলাকালীন অবস্থায় পাখিকে সফট ফুড এবং এগ ফুড খাওয়াবেন না, অন্য কোনো মেডিসিন/ সাপ্লিমেন্ট দিবেন না।
৯। সমস্যা সম্পূর্ণ সেরে যাবার পর আরো ২ দিন নিম পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে দিনে ১ বার চোখ ধুয়ে দিবেন।
১০। উপরোক্ত চিকিত্সাবিধি মেনে চলার ৩-৫ দিনের মধ্যে সমস্যা কমে না গেলে অবশ্যই আমার সাথে যোগাযোগ করবেন। সমস্যা অধিকতর গুরুতর হয়ে থাকলে বা দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলতে থাকলে আমার থেকে কিছু স্পেশাল ট্রিটমেন্ট সাপ্লিমেন্ট সংগ্রহ করার প্রয়োজন হতে পারে, যদিও এধরনের পরিস্থিতি খুব কম ক্ষেত্রেই ঘটে।

কবুতরের কিছু সাধারণ সমস্যা ও সমাধান

কবুতর পালতে গিয়ে প্রথম পর্যায়ে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হন অনেকেই, আমিও হয়েছি। আর তাই সবসময়ই চেষ্টা করি যেন ,আমি যে অসুবিধা গুলোর সম্মুখীন হয়েছি সে রকম যেন আর কাউকেই পড়তে না হয়। তাই সাধ্যমত চেষ্টা করি । বিভিন্ন ভাবে কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে ততই হতাশ হচ্ছি।
ছোটবেলায় শুনেছিলাম যে ভুতের নাকি উল্টো পায়ে হাঁটে। কিন্তু আজ অনেকদিন পর মনে হল যেন আমরাও ঠিক ভুতের মত উল্টো পায়ে হাঁটছি । বাসে উঠতে গেলে একসঙ্গে ১০ জন উঠার চেষ্টা করি,অফিস এ একজন আরেক জনের উপর ল্যাঙ মারার চেষ্টা করি। আমরা মাঝেমাঝে ভুলে যাই একজন উঠলেই আরেকজন উঠবে। কিন্তু আমার তা করি না। যাই হোক, আমি আমার একটা পোস্ট এ বলেছিলাম আমরা পড়তে পছন্দ করি না। সব কিছুই তৈরি চাই। আর তাই হয়তো সমস্যা দিনদিন কমাতো দূরে থাক উল্টো বাড়ছে। সামাজিক সাইট গুলোতে কবুতর সংক্রান্ত যে ধরণের অসম্পন্ন প্রশ্ন দেখা যায়, যেমনঃ
১) আমার কবুতর লোম ফুলিয়ে বসে থাকে বা লোম ফুলিয়ে থাকে,কি করবো ?
ব্যাখ্যাঃ কোন বিস্তারিত তথ্য নাই,বুঝার কোন উপায় নাই কি উপদেশ দেয়া যাবে ! আর অনেককে প্রশ্ন করে অপেক্ষা করতে হয়,কারন তিনি ঠিকমত খেয়াল করেননি ।!
২) আমার কবুতরের খাওয়া দাওয়া কমে গেছে, কি করবো ?
ব্যাখ্যাঃ কোন বিস্তারিত তথ্য নাই,কারও সাধ্য নাই,কি বলবে !
৩) আমার কবুতর পানি পায়খানা করছে, কি করবো ?
ব্যাখ্যাঃ কি ধরনের কোন নির্দেশনা নাই !
৪) আমার কবুতর গোসল দিবার পর ঝিমাচ্ছে, কি করবো ?
ব্যাখ্যাঃ খুবই স্বাভাবিক, তারপরও মানুষ ঔষধ দিয়ে বসে !
৫) আমার কবুতর পাতলা পায়খানা করছে / ঠাণ্ডা লাগেছে অ্যান্টিবায়টিক দিচ্ছে কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না, কি করবো ?
ব্যাখ্যাঃ যদিও অ্যান্টিবায়টিক এই ধরনের রোগে কোন কাজ করে না তারপরও দেয়া হয় !
এছাড়াও অ্যান্টিসেপটিক ঔষধ কোথায় পাওয়া যায় হোমিও কোথায় পাওয়া যায়।
এই ধরনের নানা অনর্থক নানা প্রশ্ন দেখা যায়। আমরা ছোট বেলায় পড়ে ছিলাম,”গ্রন্থগত বিদ্যা আর পর হস্থেধন, নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন ।“ যে কোনো রোগের প্রশ্ন জিজ্ঞাস করলে। যে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে, বা যে কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাস করার আগে কিছু তথ্য দিলে ভাল হয়,কি সেগুলোঃ
১) সমস্যা কয় দিনের?
২) পায়খানা কেমন রঙ এর?
৩) কিছু প্রাসঙ্গিক তথ্য… রোগ সম্পর্কিত, কোন ভিটামিন,বা ঔষধ দেয়া হইছিল কিনা ?
৪) মুখে ঘা আছে কিনা, কোন গন্ধ আছে কিনা ? খাওয়া দাওয়া করে কিনা ? ইত্যাদি
আমি বিভিন্ন সময়ে পোস্ট/কেসস্টাডি এর সাথে PMV(প্যারামক্সিভাইরাস) ও ডিপথেরিয়া রোগ নির্ণয়ও তার প্রতিকার সম্পর্কে বলেছিলাম। যদিও সবাই প্যারামক্সি ভাইরাসকেই বেশী গুরুত্ব দেন, আর সে ব্যাপারে যত তোড়জোড় করেন, কিন্তু দুর্ভাগ্য জনক হলেও সত্য যে ডিপথেরিয়াকে নিয়ে এমন কোন ব্যাবস্থা দেখা যায় না। যদিও আমাদের দেশে PMV(প্যারামক্সিভাইরাস) যত কবুতর মারা যায় তার থেকেও বেশী কবুতর মারা যায় ডিপথেরিয়া নামক রোগে যদিও কিছু লোক এগুলোকে PMV (প্যারামক্সি ভাইরাস) বলে চালিয়ে দেন । কিন্তু সেগুলো আসলে প্যারামক্সি ভাইরাস না। এই দুইটা রোগের বাইরেও আরেকটা নিরব ঘাতক আছে কবুতরের সেটা হল ম্যালেরিয়া। আর এই সকল রোগের পোস্ট পর্যায়ক্রমে দিবার খুবই ইচ্ছে ছিল, কিন্তু নকল বাজ লোকদের কারণে বন্ধ করে দিয়েছি। আর এই সকল রোগের বর্ণনা আমার বইয়ে থাকবে (ইনশা আল্লাহ)। আসুন এই রোগ নির্ণয়ে বা রোগ জিজ্ঞাসার আগে নিজেকে তৈরি করে নিই ।
১) আপানর কবুতর এর কি ঘাড় বা অন্য কোন অঙ্গ অবস ?
২) আপানর কবুতর এর কি মুখে গন্ধ আছে ?
৩) খাবার বা পানি খেলে কি মুখ নাক দিয়ে বের হয়ে আসে ?
৪) গা বা শরীর গরম বা ঠাণ্ডা ?
৫) পায়খানা কি সবুজ সাদা ?
৬) নাক দিয়ে সর্দি ঝরে ?
৭) মুখ দিয়ে কি ঘড়ঘড় শব্দ হয়?
৮) মুখে কি সাদা বা হলুদ ঘা আ আছে?
৯) চোখ কি ফুলে ও পানি ঝরে?
১০) নাক দিয়ে রক্ত পড়ে মাঝে মাঝে ?
যদি এই সব প্রশ্ন মিলে যায় তাহলে, আপনার কবুতরের ডিপথেরিয়া হয়েছে, কোন সন্দেহ বা ভুল নাই। আর অনতি বিলম্বে চিকিৎসা শুরু করেন। আর ভাল হলেও চিকিৎসা বন্ধ করবেন না কারন এই রোগের চিকিৎসা ও রোগ পরবত্তি পথ্য অনেক বেশী জরুরি। আর এর আনুমানিক সময় ৩-৪ মাস লাগে। আপনার যদি আরও কিছু প্রশ্নের উত্তর খুজার চেষ্টা করুন, যেমনঃ
১) আপনার কবুতর এর কি খাবার জমে থাকে পাকস্থলীতে ?
২) আপনার কবুতর এর কি মুখ দিয়ে গরম পানি বের হয় চাপ দিলে বা এমনিতে ?
৩) আপনার কবুতর এর কি গাআ গরম থাকে আর বসে থাকে চুপ করে ?
৪) আপনার কবুতর কি কাঁপে ?
৫) বুকের হাড্ডির নিচে কি প্রচুর খুস্কি ?
৬) লোম ফুলিয়ে বসে থাকে ?
৭) উড়তে গেলে কি হাপিয়ে যায় বা বেশী উড়েনা ?
৮) কবুতর এর ঠোঁট কি ফ্যাঁকাসে সাদা যা গোলাপি ভাব নাই বা শুকনো সাদা সাদা ভাব লেগে থাকে?
৯) কবুতরের গায়ে কি মাছি আছে ?
যদি এই সকল প্রশ্নের উত্তর পান তাহলে আপনার কবুতরের ম্যালেরিয়া হয়েছে। আর এটা ৭-৮ সপ্তাহ আপনাকে সময় দিতে হবে সুস্থ হতে। আর এগুলো শুধু তখনি সম্ভব যখন আপনি আপনার কবুতরের খামারে সময় দিবেন। তাদের আচার আচরণ লক্ষ্য করবেন। এখনে আমি রোগের কোন চিকিৎসা ব্যাবস্থা দিলাম না, কারন এগুলো খুবই স্পর্শকাতর ঔষধ তাই এগুলর যেমন ইচ্ছে ব্যাবহার ঠিকনা। একটা ব্যাপার অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, এই সবরোগের চিকিৎসা ৫-৭ দিনে সম্ভব না, তাই ২ দিনে এর ফলাফল আশা করবেন না। কারন কিছু লোক অল্পতেই তাদের আশা হারিয়ে ফেলেন, তারা ২-৩ দিনেই ফলাফল চান। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে আপনি আপনার কবুতর গুলোকে কি ঔষধ দিচ্ছেন আর কার উপদেশে দিচ্ছেন সেটা একটা বিবেচনার বিষয়। আপনি যদি সাল্মনেল্লা জন্য ercot or cosmix plus দেন তাহলে আর বলার কিছুই নাই। তাই এখনি আপনার সঠিক সময় আপনার কবুতরের সঠিক চিকিৎসা করার।একটু ঠাণ্ডা মাথাই চিন্তা করুন ও তারপর চিকিৎসা শুরু করুন। একটু চিন্তা করুন আপনার এটা হলে আপনি কি ঔষধ খেতেন। তাহলেই আপনার সঠিক সমাধান পেয়ে যাবেন। আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করুন। (আমীন)।

গ্রীষ্মকালে কবুতরের পরিচর্যা

আমাদের দেশে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে রোগবালাই ও তাদের ধরন পরিবর্তন হয়। বাসাতে যারা সখের বশে নানা ধরনের পোষা প্রাণী পালন করে থাকি, তার মধ্যে কবুতর অন্যতম। রোগ বালাইয়ের ক্ষেত্রে সৌখিন কবুতর (fancy pigeon) একটু এগিয়ে। কিছু হলেই রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে, তাই মৌসুম পরিবর্তন হলেই এই ধরনের কবুতরের পরিচর্যা একটু বেশি করতে হয়। তাই আজকের লিখাটি মূলত গ্রীষ্মকালে কবুতরের পরিচর্যা নিয়েই।
আমরা যদি একটু খেয়াল রাখি তাহলেই এসব অনাখাংখিত পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হতে পারি অনায়াসে। যেমন কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে কিছু প্রাথমিক ধারনা, বা অপ্রয়োজনীয় ঔষধের প্রয়োগ থেকে বিরত থাকা, বা না জেনে ঔষধ প্রয়োগ না করা ইত্যাদি। বেশীর ভাগ ঠাণ্ডা জনিত সমস্যা ও ডায়রিয়া তৈরি হয় পুষ্টিহীনতা ও অ্যান্টিবায়টিক এর অযাচিত প্রয়োগ থেকে তেমনি আবার বেশীর ভাগ রোগ বৃদ্ধি পেয়ে মারাত্মক অবস্থা হয় না জেনে ঔষধ প্রয়োগ ও ধৈর্য না ধরার কারনে।
একটি কবুতর না খেয়ে অনেকদিন বেঁচে থাকতে পারে, সেটা অসুস্থ বা অন্য যে কোন কারনেই হোক, আপনি যদি তার পানি শূন্যতার প্রতি খেয়াল করেন তাহলে আপনি তার রোগ নিরাময় করার সুযোগ পাবেন। আবার হয়তো সুস্থ হয়ে এক সপ্তাহ ঠিকমত খাবার পেলে আবার ভাল স্বাস্থ্য ফিরে পেতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ খামারি এটি বাদ দিয়ে খাওয়ানোর ব্যাপারে ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে পড়েন আর সেটা কি ধরনের খাবার, যেটা হজমের ক্ষেত্রে কঠিন। যেমন বেশীরভাগ ক্ষেত্রে খামারিরা ছোলা বুট ভিজিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করেন, বা এই ধরনের দুঃপ্রাচ্য খাবার যা অসুস্থ অবস্থাই আমার নিজেরা ও হয়তো খাব না। অথবা কোন ঔষধ চলাকালিন সময়ে ভিটামিন যুক্ত করা। যার ফলাফল উল্টো হয়ে যায়। তাই আগে আপনার খামারে কবুতরকে সুস্থ করার আগে আমাদের মানসিক ভাবে সুস্থ হতে হবে।
অনর্থক ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নেতিবাচক বা কুসংস্কার থেকে মুক্ত থাকতে হবে। কান চিলে নিয়েছে এই ধরনের কথার পিছনে না ছুটে নিজের বিচার বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে হবে। আপনাকে সেই জায়গাতে চিন্তা করতে হবে যে আপনি এই জায়গায় থাকলে কি ঔষধ খেতেন আর কি করতেন। তাহলেই আপনার অর্ধেক সমস্যা কমে যাবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে, কবুতর পালন আমাদের, নেশা, পেশা,সখ বা তার থেকেও বেশি কিছু। তাই এটা নিয়ে ছেলেখেলা বা অন্যের খেয়াল খুশির উপর নির্ভর করা যাবে না। অনেক সময় পার হয়ে গেছে এখন আমাদের জেগে উঠার পালা। তাই জেগে উঠুন আপনার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়কে কাজে লাগান। আপনার শিক্ষা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান। যাই হোক…আমার এবার কাজের কথায় আসি। শীত প্রায় গত হয়েছে আর গ্রীষ্ম প্রায় আগত, আর শীতের আগামন ও গত এই সময় তাই বেশি রোগ হয় খামার। আর একজন খামারির সফলতাও ব্যার্থতা এই সময়টাতেই নির্ভর করে।
আশাকরি অন্য যে কোনো শীতের থেকে এই শীত আপনারাও আপনাদের খামারে তেমন বেশি রোগের প্রকোপ হয়নি। তার কারন আপনি একটু সচেতন ছিলেন। এমন অনেক শীত গেছে যে শীতে খামারকে খামার উজাড় হয়ে গেছে। যায় হোক শীতের আগমন ও গত এর সময় যে রোগের বেশি প্রাদুর্ভাব হয়, আর তা হল ঠাণ্ডা, পাতলা পায়খানা, ডিপথেরিয়া ইত্যাদি। আর আপনার যদি এসব রোগের সম্পর্কে সাধারন জ্ঞান থাকে। তাহলেই হয়ত আপনি উতরে যেতে পারবেন,অনর্থক ঔষধ ব্যাবহার করে এর কোন ফল পাবেন না। আসুন আমরা মাসে কিভাবে ঔষধও ভিটামিন প্রয়োগ করব তারই একটি ধারণা দিবার চেষ্টা করি-
প্রথম পর্যায়ঃ (প্রতিরোধক)
১) সাল্মনেল্লা কোর্স- ২ টেবিল চামচ শাফি+ ২ টেবিল চামচ ফেবনিল ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ৪-৫ দিন সাধারণ খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (একটানা)। (হোমি ও ব্যাপ্তেসিয়া ৩০, ১সিসি =১ লিটার পানিতে মিক্স করেও আপনি এই কোর্স করাতে পারবেন। ( একটানা৪-৫দিন )
বিঃদ্রঃ এই কোর্স চলাকালীন কবুতর সবুজ পায়খানা করতে পারে, আর এই অবস্থায় ঔষধ বন্ধ করা যাবে না, এটা ভিতরের জীবাণু টাকে বের করতে সাহায্য করে।
২) অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ১ সিসি ১ লিটার পানিতে মিক্স করে মাসে ১-২ দিন দিবেন। (২দিন আলাদা ভাবে।)
বিঃদ্রঃ আবেগের বশে বেশি দিবার চেষ্টা করবেন না বা বেশী দিন দিবেন না তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
৩) রসুন বাঁটা ১ চামচ (চা) + মধু ১ চামচ+লেবুর রস ১ চামচ= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ছেকে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন ১ দিন মাসে।
বিঃদ্রঃ ৩ নং টি করার সময় অনেক কবুতর বমি করতে পারে যা ভয়ের কারন নাই, তবে যদি ক্রিমির কোর্স করা না থাকে, বা সাল্মনেল্লা কোর্স করা না থাকে তাহলে এই কোর্স করাবেন না অনুগ্রহ করে।
( উপরের ৩ টি সাল্মনেল্লার জন্য বিশেষ উপকারি তাই ছকে ৩ টাই আলাদা দুরত্তে রাখবেন ।)
৪) হোমিও deptherinum 200 , ১ সিসি= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন ( মাসে ১-২ বার আলাদা ভাবে।)
৫) হোমিও Tiberculinum 30, ১সিসি= ১লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (মাসে১বার)।
৬) হোমিও Belodona 30, ১সিসি= ১লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (মাসে১বার)।
৭) হোমিও Borax 30, ১সিসি= ১লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (মাসে১বার)।
৮) হোমিও Eupatorium Perfo. ১সিসি= ১লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (মাসে১বার)।
(সতর্কতাঃ২ধরনের হোমিও ঔষধ একসঙ্গে ব্যাবহার করবেন না একটানা প্রয়োগ করবেন না অনুগ্রহ করে।)
দ্বিতীয় পর্যায়ঃ (প্রতিকার)
৯) মাল্টি ভিটামিন (pawer max(made in Vietnam),All Vit Ma(Made in Germany),Max grower (made in Holland) ১সিসি/গ্রাম= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ৩-৪ দিন সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (একটানা)।
১০) ক্যালসিয়াম ও ই ভিটামিনের জন্য (Calcium Forte+AD3e ) এই ধরনের ভাল মানের ভিটামিন প্রয়োগ করতে পারেন, ১সিসি/গ্রাম= ১লিটার পানিতে মিক্সকরে ৩-৪ দিন সাধারন খাবারপানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (একটানা)।
১১) লিভার টনিক হিসাবে হামদারদ এর (Cinkara, Icturn, Karmina) করতে পারেন ২ টেবিল চামচ = ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ২-৩ দিনসাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (একটানা)।
১২) ভিটামিনবি হিসাবে (toxynil, biovit, vita B+C) ১সিসি/গ্রাম= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে২-৩ দিন সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (একটানা)।
১৩) এছাড়া ও আলভিরা, স্যালাইন ( ভেটএর), লেবুর রস বা ভিটামিন সি প্রয়োজন মত ব্যাবহার বা প্রয়োগ করতে পারেন। (গরমের সময় পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কবুতর পানি শূন্যতাই না ভুগে।)
তৃতীয় পর্যায়ঃ ( প্রতিষেধক)
১৪) ক্রিমির ঔষধ শীতে ৪৫ দিন পরপর ও গ্রীষ্মে ২ মাস পরপর অবশ্যই প্রয়োগ করতে হবে। (wormazole/avinex/panacure) আদর্শ ক্রিমির ঔষধ হিসাবে দিতে পারেন। (খেয়াল রাখবেন ক্রিমির ঔষধ প্রয়োগ রাতে করুন, আর পরিমানটা নির্দিষ্ট করুন। সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন না, আর মানুষের কোন ক্রিমির ঔষধ কখনও দিবেন না। আর প্রয়গের আগে ও পরে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলুন।)
১৫) যারা pmv এর জন্য ভ্যাক্সিন বা পক্স বা অন্য রোগের ভ্যাক্সিন দিতে চান তারা একটু নিয়ম মেনে তারপরই দিবেন (আর এটা অবশ্যই বাইরেরটা যদিও পক্স ও অন্য রোগের ভ্যাক্সিন এ তেমন ভুমিকা রাখেনা) , আর যারা মনে করেন যে মুরগির ভ্যাক্সিন দিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলবেন, তারা এই পোস্টটা এড়িয়ে চলুন। কারন তাদের জন্য এই পোস্ট না।
১৬) আপনার কবুতরকে অবশ্যই ৩ মাস পরপর উকুন নাশক শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করাতে হবে, যাতে মাইট ও কবুতরের গায়ের মাছি থেকে নিরাপদ থাকা যায়। যা বিভিন্ন রোগের কারন হিসাবে দায়ী। সাধারন অবস্থায় প্রতি সপ্তাহে গোসল এর ব্যাবস্থা করা ভাল, আর রোগ থেকে আরোগ্য লাভের পর অবশ্যই গোসল দিবেন।
১৭) প্রবায়টিক মাসে ২ বার অবশ্যই দিবেন, সেটা প্রাকৃতিক হোক বা প্রস্তুত করাই হোক। আর অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহারের পর এটা দিতে কোনদিন যেন ভুলে না জান,সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
এই ছকটি দিন আকারে বা তারিখ হিসাবে দিয়া হয়নি কারন, অনেকেই মনে করেন যে, তারিখ আকারে নিয়মটা আদিক ওদিক হয়ে গেলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে, যা আসলেই ঠিকনা, আমন কি কবুতরের অসুস্থ অবস্থাতেও এর ব্যাতিক্রম করতে চান না। তাই এমন ভাবে উপস্থাপন করা হল যাতে আপনার পছন্দমত আপনি সাজিয়ে নিতে পারেন। অবশ্যই এগুলো প্রয়োগ করতে গিয়ে পরিবেশ পরিতস্থিতির ও আবহাওয়ার দিকে খেয়াল রাখবেন। যাতে আপনি নিজে একজন পরনির্ভরশীল খামারিতে পরিনত না হন। বা এটা করতে গিয়ে আপনাকে আরেক জনের উপর নির্ভর করতে না হয়। পরিশেষে কোরআন এর একটি আয়াত দিয়ে শেষ করতে চায়,
“আর যে সম্পদকে আল্লাহ তোমাদের জীবন-যাত্রার অবলম্বন করেছেন, তা অর্বাচীনদের হাতে তুলে দিও না। বরং তা থেকে তাদেরকে খাওয়াও, পরাও এবং তাদেরকে সান্তনার বানী শোনাও।”(সূরা আননিসাঃআয়াত- ৫)

কবুতরের ডাইরিয়া (উদরাময়)

কবুতরের নানা ধরনের রোগবালাই এর মধ্যে কবুতরের ডাইরিয়া বা উদরাময় (Diarrhoea) অন্যতম। এমন কোন খামারি নেই যিনি এই ধরনের অভিজ্ঞতা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পান। আর এটা ঘুরে ফিরে আসে। আর খামারিকে এক অনাখাংকিত পরিস্থিতির উদ্রেগ করে। সাধারনত পেটের যান্ত্রিক গোলযোগের কারনে এই রোগের সৃষ্টি হতে পারে। কিছু উদরাময় সাধারণ হয় যা আপনা আপনি সেরে যায়, আর কিছু দীর্ঘমেয়াদী হয় যা দুর্গন্ধ যুক্ত হয়ে থাকে। আর সহজে নির্মূল করা কঠিন হয়ে পড়ে। এটি প্রাথমিক সংক্রমন হলেও পরে বিস্তার লাভ করে থাকে।


কারনঃ
১) অসাস্থকর পরিবেশ।
২) খারাপ বা বিষাক্ত খাবার খেতে দেওয়া।
৩) অতিরিক্ত আহার বা অনিয়মিত আহার।
৪) অতিরিক্ত প্ররিস্রম ( যেমন ঘনঘন ডিম বাচ্চা তুলা)।
৫) প্রখর রোদ ভোগা বা ঘাম রোধ।
৬) প্রচণ্ড ঠাণ্ডা।
৭) দুর্গন্ধ ও দুষিত বায়ু সেবন বা বাতাস চলাচলের উপযুক্ত ব্যাবস্থার অভাব।
৮) নোংরা বা দুষিত পানিপান।
৯) নোংরা খাবার ও পানির পাত্র।
১০) ভিজা বা স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় বাস।
১১) অতিরিক্ত ও অনর্থক অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগ।
১২) একস্থান থেকে অন্যস্থান পরিবর্তন বা ভ্রমন জনিত।
লক্ষণঃ
১) পাতলা,চাল ধোয়া পানির মত পাতলা পায়খানা।
২) পেট ফাপা ও পেট বেদনার কারনে ঝিমানো ভাব বা গুজো হয়ে বসে থাকা।
৩) স্লেমা ও পিত্ত মিশ্রিত মল।
৪) ঝিল্লি দুর্গন্ধ যুক্ত পাতলা পায়খানা ও দুর্বলতা।
৫) প্রচণ্ড দুর্বলতা ভাব ও বারবার পাতলা পায়খানা করতে করতে অবসন্ন হয়ে পড়া।
৬) বমি ও গোটা খাবার পায়খানার সাথে বের হাওয়া।
৬) শেষ পর্যায়ে খাওয়া বন্ধ করে দিয়া।
চিকিৎসাঃ
১) হামদার্দ এর পেচিস নামে ট্যাবলেট১/২করে দিনে ৩ বার ৩ দিন।
২) অথবা মার্বেলাস ১ চামচ করে ৩০ সিসি পানিতে মিক্স করে ১০ সিসি করে দিতে হবে।
৩) গোটা খাবার পায়খানার সাথে বের হলে হোমিও Chaina ২০০ফোঁটা করে দিনে ২-৩ বার ৩ দিন।
৪) চালের স্যালাইন দিতে হবে নিয়মিত, আর গ্লুকোস সহ সাধারন স্যালাইন দিতে হবে।
৫) দীর্ঘদিনের পুরাতন পাতলা দুর্গন্ধ যুক্ত পাতলা পায়খানার জন্য হোমিও Sorinum 200 ২ ফোঁটা করে দিনে২- ৩ বার ৩ দিন।
তবে ঋতু অনুযায়ী ঔষধের ব্যাতিক্রম হয়। আর এই রোগের জন্য শুধু ঔষধ সেবনই যথেষ্ট নয়। পর্যাপ্ত সেবা ও যত্ন নেয়া জরুরি। অনেক ক্ষেত্রে শুধু যত্নের অভাবে এই রোগ বেশি হয়। তাই পরিস্কার পরিছন্নতার সাথে ভাল খাবার ও পানির ব্যাবস্থা করতে হবে।

কবুতরের টিকা বা ভ্যাকসিন

একজন নতুন পালক হিসাবে যখন কবুতর পালা শুরু করেন তখন তাঁর মনে কবুতর পালা সম্পর্কে একটা নেগেটিভ ধারনা দিয়ে দেওয়া হয়। ফলে সেই কবুতর পালক প্রথম থেকেই একটা নার্ভাস অবস্থার মধ্যে দিন পাত করে। ফলে সামান্য কিছু হলেই ভয় ও আতঙ্ক তাকে গ্রাস করে ফেলে, তখন তিনি বিভিন্ন জনের কাছে পরামর্শের জন্য ছুটে যান। আর পরামর্শ দাতা জানুক আর নাই জানুক তাকে একটা পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। সেই নতুন কবুতর পালক নিজের অজান্তেই দিন কয়েক এর মধ্যে মোটামুটি সব ধরনের ঔষধের অভিজ্ঞতা নিয়ে ফেলেন। যদি কবুতরের ভাগ্য ভাল থাকে, আর তাঁর জীবন লাইন যদি দীর্ঘ হয় তাহলে হয়ত সেই যাত্রায় বেঁচে যেতে পারে। আর যদি কবুতরটি মারা যায় তখন মনকে সান্তনা দেন যে তাঁর হায়াত ছিল না। এটাই হল আমাদের সাধারন চিত্র। আর এই চিত্রের সূত্রপাত হয় ভ্যাকসিন দিয়ে। তাই অধিকাংশ কবুতর পালকের প্রথম কয়েকটি সাধারন যে প্রশ্ন থাকে, তাঁর কয়েকটি হল। হ্যা এটি অবশ্যই কবুতরের টিকা প্রসঙ্গে-

১) কোন ভ্যাকসিন দিব? ২) কয় মাস পরপর দিব? ৩) কিভাবে দিব? ইত্যাদি, ইত্যাদি। আর যতক্ষণ পর্যন্ত সেই কাঙ্ক্ষিত ভ্যাকসিন না দেন ততক্ষণ পর্যন্ত,সেই খামারি মানসিকভাবে প্রশান্তি লাভ করেন না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এই ভ্যাকসিন সম্পর্কে আমাদের দেশে খুব কম লোকেরই সঠিক অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান আছে। অনেকেরই ধারনা যে ভ্যাকসিনই সকল সমস্যার সমাধান। ভ্যাকসিন না দিলে কবুতর মারা যাবে, ভ্যাকসিন না দিলে কবুতর টাল হয়ে যাবে………। এরকম নানা ধরনের কল্প কাহিনীও ধারনা নিয়ে অধিকাংশ খামারি কবুতর পালন করেন। আমি যদিওএর আগে (PMV,PPMV,PMV1(New Castle) নিয়ে পোষ্ট দেওয়া হয়েছিল। তারপরও ভ্যাকসিন সম্পর্কে আরও ভাল ধারনা দেবার লক্ষে আমার আজকের এই ছোট প্রয়াস। আশাকরি এই পোষ্ট পড়ে খামারিরা কিছুটা হলেও উপকৃত হবে। আর তাহলেই আমার লিখাটা সার্থকতা লাভ করবে। এখন আসুন আমারা জেনে নেই ভ্যাকসিন কি? এর উপকারিতা কি? কি ধরনের ভ্যাকসিন দেয়া উচিৎ? কখন ভ্যাকসিন দেয়া যায়…? ইত্যাদি
ভ্যাকসিন এর সংজ্ঞাঃ নির্দিষ্ট রোগ প্রতিরোধের জন্য ব্যাবহ্রিত এক ধরনের বিশেষ টিকা। যা সেই রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু থেকে তৈরি করা হয়। সেই নির্দিষ্ট রোগের প্রতিরোধক হিসাবে। অসুস্থতা, অক্ষমতা, এবং মৃত্যু সৃষ্টিকারী অনেক রোগ এখন টিকা ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায়। ভ্যাকসিন বা টিকা অ্যান্টিবডি তৈরিতে সহায়তা করে ও তথাকথিত সেলুলার ইমিউন সিস্টেম উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে।
ভ্যাকসিনের প্রকারঃ ভ্যাকসিন সাধারণত ২ ধরনের ১) লাইভ ভ্যাকসিন ও ২) কিলড ভ্যাকসিন।
১) লাইভ ভ্যাকসিনঃ একটি ক্ষয়িত টীকা বা প্যাথোজেন যার তীব্রতা হ্রাস করে তৈরি একটা টীকা। যা দুর্বল সংক্রামক এজেন্টকে নির্মূল করতে কাজ করে যা নির্দোষ বা কম উৎকট হয়ে পরিবর্তিত হয়। ভাইরাস “হত্যা” দ্বারা এই টিকা উত্পাদিত হয়।
এই টিকা স্বল্প সময়ের জন্য দেয়া হয় ও শরীরের বাইরে প্রয়োগ করা হয়।
২) কিলড ভ্যাকসিনঃ
অক্রিয়াশীল বা কিছু উপায়ে হত্যা করা হয়েছে এমন একটি সংক্রামক এজেন্ট থেকে তৈরি একটা টীকা।
এটি দীর্ঘ সময়ের জন্য দেয়া হয় ও শরীরের ভিতরে প্রয়োগ করা হয়।

সতর্কতাঃ
১) লাইভ ভ্যাকসিন প্রয়োগের ব্যাপারে নির্দিষ্ট ও খুব সতর্কতা পালন করতে হয়। যেমনঃ মাস্ক,গ্লাভস পরিধান করা ও খেয়াল রাখতে হয় যেন ভ্যাকসিন মাটিতে না পড়ে বা অবশিষ্ট বা বেচে যাওয়া ভ্যাকসিন পুতে ফেলতে হয়।
২) সুস্থ প্রদর্শিত সমস্ত পায়রা ভ্যাকসিন করা যেতে পারে।
৩) চিকিত্সাগত ভাবে অসুস্থ এবং নির্বল পায়রা ভ্যাকসিন করা যাবেনা।
৪) ডিম পাড়বে এমন কবুতরকে ভ্যাকসিন বা টিকা দেয়া যাবেনা।
৫) ভ্যাকসিন এর সাথে দেয়া ঔষধ ছাড়া বাইরের অন্য কোন ভ্যাকসিন এর ঔষধ মিক্সআপ করা যাবেনা।
৬) ভ্যাকসিন দোকান/পরিবহন কালে বা ফ্রিজে (২°সেঃথেকে৪° সেঃ) এর তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে। বরফে পরিণত করবেন না। আলো থেকে রক্ষা করতে হবে মানে সূর্যের আলো যেন না পড়ে।
৭) লেবেল ছাড়া কোন ভ্যাকসিন দিবেন না, আর মেয়াদ দেখে নিবেন।
৮) কৃমির ঔষধ ও ভ্যাকসিন কাছাকাছি সময়ের ব্যাবধানে দেয়া যাবে না।
৯) স্বল্প সময়ের ব্যাবধানে অন্য ভ্যাকসিন দেয়া যাবে না।
ভ্যাকসিন বা টিকার জন্য উপযুক্ত সময় নীচে দেওয়া হল:
১) স্টক প্রজনন জোড়ার মেটিং এর ৪-৬ সপ্তাহ আগে।
২) ইয়াং পায়রা নীড় মধ্যে ৪ দিন বয়সের আগে।
৩) রেসিং সিজন শুরু করার ৪-৬ সপ্তাহ আগে।
৪) প্রদর্শনী জন্য কবুতরকে ৪-৬ সপ্তাহ পূর্বে।
ভ্যাকসিন বা টিকা দিবার আগে করনীয়ঃ
কৃমির ঔষধ দিবার যে নিয়ম পালন করা হয়, ভ্যাকসিন এর ও ক্ষেত্রে অনেক একই নিয়ম অনুসরন করা ভাল। যেমনঃ
১) বেশি গরমে ভ্যাকসিন দেয়া যাবে না।
২) ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার আগে সুষম খাদ্য দিতে হবে।
৩) লিভার টনিক দিতে হবে।
৪) সকালে বা রাতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা ভাল।
৫) ভ্যাকসিন দিবার দিন স্যালাইন দিতে হবে। প্রয়োজনে চালের স্যালাইন দেয়া যেতে পারে।
৬) ভ্যাকসিন দিবার একদিন পর থেকে ৩ দিন মাল্টি ভিটামিন দিতে হবে।
৭) পায়ে বা পাখায় ভ্যাকসিন পুশ করা যাবে না।
৮) সব ধরনের ভ্যাকসিন এর ক্ষেত্রে একই নিয়ম মেনে চলতে হবে।
ভ্যাকসিন করার নিয়মঃ কিলড ভ্যাকসিন পুশগান বা ইনসুলিন এর সিরিঞ্জ দিয়ে ভ্যাকসিন করতে হয়। পুচ্ছ থেকে ঘার অভিমুখে শিরদাঁড়ার শেষ প্রান্তে পায় রাপ্রতি 0.২ মিলি পরিমান ইনজেকশন পুশ করতে হয়। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যেন মাথার পিছনে না পুশ করা হয় বা হাড্ডিতে সূচনা লাগে। এতে কবুতর প্যারালাইস হবার সম্ভাবনা থাকে। লাইভ ভ্যাকসিন সাধারণত ১ চোখে বা ১ নাকে ১ ফোঁটা করে দিতে হয়। সবক্ষেত্রেই সবগুলো ঔষধ এক সঙ্গে মিক্স করতে হয়। ভ্যাকসিন ভায়াল খোলার পর ২ ঘণ্টা সময় পর্যন্ত ব্যাবহারের জন্য উপযুক্ত থাকে।
ভ্যাকসিন ইমিউনিটি স্থিতিকাল বা সময়: কিলড ভ্যাকসিন ১২ মাস। লাইভ ভ্যাকসিন ৩০-৪৫ দিনপরপর।
আমাদের দেশে ব্যাপক ভাবে কবুতরের কোন ভ্যাকসিন আমদানি করা হয় না। যেগুলো সহজলভ্য। সেগুলো সবই হাঁস বা মুরগির (পলট্রি এর জন্য প্রযোজ্য)। এগুলো কততুকু কাজে আসে সেগুলো নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কিন্তু তবুও একবিচিত্র কারনে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বা এক্সপার্ট হিসাবে দাবীকৃত কিছু লোক সকল কবুতর খামারিকে এই ধরনের ভ্যাকসিন ব্যাবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। শুধু তাই নয়, যেভাবে তারা এটার ব্যাবহার এর পরামর্শ দেন সেটাও সম্পূর্ণরূপে ভুল আর ভুল। এমনকি তারা এই সব কোম্পানির লিখা নির্দেশও ঠিকমত পালন করতে বলেন না। ফলে ভ্যাকসিন এর উপকারিতা থেকে অপকারিতাই বেশি হয়। যেসকল কাজের ভ্যাকসিন আছে। সেগুলো ব্যাক্তিগত উদ্যোগে আনা হয়। যা কিনা সাধারন মানুষ কিনতে গেলে, গায়ের লোম খাড়া হয়ে যাবে এর দাম শুনে। এই সব স্বার্থান্বেষী ব্যাবসায়ি বেশি মুনাফার আশায় বাংলাদেশের বাইরে থেকে এই ধরনের ভ্যাকসিন নিয়ে আসে ও ১০ গুনদামে বিক্রি করে থাকেন। আমাদের দেশে কবুতরের অবকাঠামো উন্নয়ন এর জন্য এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি, দু একটা ছাড়া। যায় হোক আমার বাক্তিগত পরামর্শ সকল কবুতর খামারিদের যদি ভ্যাকসিন সত্যিই করতে চান। তাহলে উন্নতমানের ভ্যাকসিন ব্যাবহার করুন আর তা না হলে ভ্যাকসিন দেয়া থেকে বিরত থাকুন। কারন যদি সত্যিসত্যি পারামক্সি ভাইরাস দ্বারা আপনার খামার আক্রান্ত আপনি কিছু বুঝার আগেই আপনার পুরো খামার সাফ হয়ে যাবে , তা এই so called ভ্যাকসিন দেয়া থাকুক আর নাই থাকুক এতে কোন কাজে আসবে না । অনেকে বলে থাকেন ভ্যাকসিন ৬ মাস দিলেই হয়। কিন্তু এই সব লোক আসলে ভুলের রাজ্যে বাস করে। আপনি যদি ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করেন তাহলে অবশ্যই সারা বছর ভ্যাকসিন দেয়া উচিৎ । আর তা না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাঁর দায়দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে। সেইসব উপদেশ কারীকে তখন আপনার পাশে পাবেন না। তবে আপনি যদি ৩ টি কাজ ঠিকমত করে থাকেন তা হলে আপনাকে আপনার খামার নিয়ে চিন্তিত থাকতে হবে না।
১) খামারপরিস্কার রাখা।
২) সাল্মিনিল্লা কোর্স করা।
৩) কৃমির ঔষধ প্রয়োগ করা।
এখন আসুন আমরা জেনেনি কি ধরনের ভ্যাকসিন আপনি ব্যাবহার করলে সত্তিকারের উপকৃত হবেন। একটা কথা খেয়াল রাখবেন, প্যারামক্সি ভ্যাকসিন ছাড়া অন্য যেসকল ভ্যাকসিন আছে সেগুলোর ব্যাবহারিক কার্যকারিতা খুব একটা নাই।
কি ধরনের ভ্যাকসিন বা টিকা কবুতরের জন্য উপযুক্তঃ
১) chevivac-P200 Vaccine ২) Colombovac PMV Vaccine ৩) Avian PMV vaccine
আপনি আপনার কবুতরের একমাত্র অভিভাবক আর তাই আপনার কবুতরের ভালমন্দ আপনাকেই বুঝতে হবে। তাই নিজের বিবেক বুদ্ধি ব্যাবহার করবেন। কোনটা আপনার কবুতরের জন্য ভাল আর কোনটা না সেটা আপনি ছাড়া আর ভাল কেউ বুঝবেনা। কারন আপনার কবুতর যখন মারা যাবে বা কোন ক্ষতি হবে তখন অন্য সকলের আফসোস করা ছাড়া আর কোন কিছু করার থাকবে না। সফল হলে যেমন আপনার লাভ তেমনি অসফল হলেও আপনারই ক্ষতি। তাই বিচার বিবেচনা আপনারই হাতে

কবুতরের শস্য আটকানো / টক খাদ্য / বড় হাপর(Big Blowers) রোগ

সধারনত কবুতরের শস্য আটকানো / টক খাদ্য / বড় হাপর(Big Blowers) রোগ এর চিকিৎসার থেকে প্রতিকারের ব্যাবস্থা করা ভালো। কারন, দেখা গেছে ৯০% ভাগ টক খাদ্য(sour crop) সমস্যা তৈরি হয় পাখির অধিক খাদ্য গ্রহনের ফলে। আর বিশেষ করে অধিক পরিমান পানির গ্রহনের ফলে এটা বেশি হয়। সাধারণত বড় আকারের ফসল খাবার খেলে এটা হবার সম্ভাবনা একটু বেশী থাকে । এটা যদি খাবারের বরাদ্দ অংশ নির্দিষ্ট করে দেয়া হয় এবং ছোট আকারের খাদ্য দেওয়া হয় তাহলে এর ধরনের সমস্যা হবার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। এই ধরনের সমস্যায় সাধারণত স্ফীত বক্ষ পারাবত (বিশেষ কবুতর বা Pouter) বেশী ঝুকির মধ্যে থাকে।
কারনঃ এই সমস্যাটা তৈরি হয় মুলত যখন খাবার ও পানি শেষ হয়ে যায় ও দীর্ঘসময়, কোন প্রকার খাবার ও পানি সরবরাহ না করা হয়। আর এরপর যখন খাবার দেওয়া হয় তখন তারা পাকস্থলীর পূর্ণ করে খায় ফলে এর মধ্যে খাদ্যাদিও পানির ভারে পাকস্থলী ঝুলে পরে ও হজমের অসুবিধা হয়। অনেক সময় ধান বা এই জাতীয় খাবার পাকস্থলীর মধ্যে আটকে গেলে পরে সংক্রমণ হয়ে এটা হয়। আবার প্রজননের সময়ও দুধ উন্নয়নশীল পাখি/ কবুতর থেকে ঘটতে পারে। অনেক সময় নর মাদিকে ডিম পারার সময় তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়, এই সময় মাদী ঠিকমত খেতে ও পান করতে পারে না। আর হটাৎ করে খাবার সুযোগ পেলে বা ডিমে তা দেবার সময় ডিম থেকে অনেকক্ষণ পর উঠে গাণ্ডে পিণ্ডে খেলে এই সমস্যা হতে পারে। তবে ব্রিডিং জোড়ার ক্ষেত্রে নরকে আলাদা করে বা ডিমে তা দিবার সময় বানর দ্বারা মাদিকে উত্তেজিত করার সময় আলাদা করে, যদি নির্দিষ্ট পরিমান খাবার দেওয়া হয়। স্ফীতবক্ষ পারাবত বিশেষ (Pouter) কবুতরকে ঘনঘন খাবারের বরাদ্দ অংশ নির্দিষ্ট করিয়া দেয়া হয়। তাহলে এই ধরনের সমস্যা থেকে নিরাপদ থাকবে। মনে রাখতে হবে যে, যদি খাবারের ক্ষেত্রে এই ব্যাবস্থা না নেয়া হয় তাহলে ২-৩ দিনের মধ্যে sour crop হতেপারে।
প্রতিরোধ ও প্রতিকারঃ খামারিকে কখনই এই ধরনের খাবারের ব্যাপারে বিধি নিষেধ আরোপ করা ঠিক না। এক্ষেত্রে কবুতর(Pouter)যদি সবসময় খাবার ও পানি সরবরাহ করা হয়, আর যদি তারা সবসময় হাতের কাছে খাবার ও পানি পায় তাহলে তাদের খাবারের ব্যাপারে তেমন আগ্রহ থাকবে না , যেমন অনেকক্ষণ পর দিলে থাকে। তবে এর ব্যাতিক্রম ও হতে পারে। আর এই কারনে খামারে বিভিন্ন উৎসে খাদ্য মজুদ থাকা উচিৎ। খাদ্য আবদ্ধ হয়ে বা (ওভারলোড) হয়ে পাকস্থলীতে তা পচে বা টক খাদ্য(sour crop) হবার আগেই অবিলম্বে এর চিকিত্সা করা উচিত। প্রথম উপসর্গ হিসাবে একটি নিস্তেজ হবে। তারা চেহারায় একটা দুঃখিত বা অসুস্থতার ভাব নিয়ে এক কোনে চুপ করে বসে থাকে। যেহেতু তাদের পাকস্থলী খাবারে পূর্ণ থাকে তাই তারা আর খাবার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ দেখায় না। আর এই সময় চিকিত্সা করা না হলে কয়েক দিনের মধ্যেই মারা যায়। সাধারণত তাদের মুখের উপর দু:খিত বর্ণ থাকে সেই সঙ্গে কোণে বসে থাকে এবং মাত্রাতিরিক্ত ভারী ফসলের কারণে ডাউন ডিম্ব প্রসার হয়। সম্ভবত এই সময়ে তাদের তেমন খাওয়া হয় না এবং চিকিত্সা করা না হলে কয়েক দিনের মধ্যেই মারা যাবে। তখন তারা চেহারায় একটা দুঃখিত বা অসুস্থতার ভাব নিয়ে এক কোনে চুপ করে বসে থাকে। যেহেতু তাদের সাধারণত কবুতরের পাকস্থলী পানিতে পরিপূর্ণ থাকে তাই একে উল্টিয়ে বুকে হালকা চাপ দিয়ে পানি বের করে দিতে হবে। যদি পাকস্থলী খাদ্য শস্য বা ক্ষুদ্র দলা ধরনের কোন কিছু দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে তাহলে হালকা উষ্ণ গরম পানির সাথে probiotics মিক্স করে পরিষ্কার করতে হবে। অথবা অ্যাপেল সিডার পানির সাথে মিক্স করে flush করতে পারেন অথবা অল্প একটু বরিক পাউডার পানির সাথে মিক্স করে flush করতে পারেন। খাবার জমে থাকার ফলে পাকস্থলী ব্যাকটেরিয়া তৈরি হতে পারে অথবা রোগের আধিক্যে Doxivet 1 Gram পানির সাথে মিক্স করে অথবা ৩০সিসি পানির সাথে ১ গ্রাম বেকিং সোডা মিক্সকরে flush করতে পারেন।এভাবে২-৩ বার পূর্ণকরে flush করতে হবে। flush এর জন্য আপনি বড়(গাড়ির battery তে পানি দেবার সময় যে ড্রপার ব্যাবহারও করা হয়।) ড্রপার ব্যাবহার করতে পারেন। যদি কবুতর বড় দানা খাদ্য খেয়ে থাকে তাহলে এটা খুবই কঠিন হয় বের করে আনা। আর এটি বেশী ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়। এই অবস্থায় কবুতর পানি শূন্যতায় ভুগতে পারে তাই তাকে স্যালাইন পানি দিতেপারেন,যাতে পানি শূন্যতা দূর হয়। যদি কবুতরের হাপর( Blowers) বড় হয়ে যায় তাহলে, তা একটা কাপড় দিয়ে হাড় ভাঙ্গা রুগীর মত গলার সাথে বেঁধে রাখতে হবে। যেন এটা ঝুলে না থাকে। এই অবস্থা সেরে যাবার পরও চামড়া তা ঝুলে থাকে আর এই অবস্থায় চামড়াটা ধরে রাবার ব্যান্ড দিয়ে বেঁধে দিতে হয়। জরুরী ভাবে মনে রাখতে হবে যেন আটকানো খাবার কোন মতেই ভিতরে না থাকে।
এ পর্যায়ে তা অবিলম্বে আবর্তক(Recurring) থেকে এটি প্রতিরোধ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
পাকস্থলী খাদ্যশস্য বা ক্ষুদ্র দলা থেকে পরিষ্কার হবার পরপরই আবার প্রচণ্ড খুব ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত হবে, তাই তাদের যদি অবিলম্বে আবার খাবার সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে এই ঘটনা পুনরায় ঘটবে।
ধরুন আপনি সকালে কবুতরটিকে কয়েকবার flush করে খামারে ফিরিয়ে দিলেন আর এই ঘটনা যদি আবার ঘটে তাহলে এটা দোষ সেই প্রাণীটিকে দিব না এর জন্য আপনি দায়ী থাকবেন। পাখি পরিপূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত অল্প পরিমান খাবার ও পানি একাধিক বার দিতে হবে। তবে তরল খাবার দেওয়াটা উত্তম। মনে রাখতে হবে এটি সাধারণতঃ সারতে কয়েক দিন সময় লাগে।

কবুতরের ধনুষ্টংকার বা Tetanus রোগ

একজন খামারিকে রোগবালাই, প্রতিকূল আবহাওয়া ইত্যাদি প্রতিনিয়ত নানা বিরূপ অবস্থার সাথে লড়াই করতে হয়। ঠিক যেন একজন চালক মূল সড়কে গাড়ি চালানোর সময় অন্যদিকে দৃষ্টি সরানোর সুযোগ থাকে না ঠিক তেমনি। আর যখন সমস্ত প্রতিকূল অবস্থা থেকে একজন খামারি সফল হয়, তখন তার অংশও কারো সাথে ভাগ করতে চাইবেন না। কারন এটা তার একার কৃতিত্ব। আর এই আনন্দ যা ভাষাই প্রকাশ করা যাবে না । আর এই সফলতার পেছনে যে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা আছে তার মধ্যে কবুতরের ধনুষ্টংকার বা Tetanus রোগ। দেশে ১-১৫ দিনের কবুতরের বাচ্চা মারা যাবার পেছনে ৭০% ভাগ এই রোগ দায়ী। এই রোগের মূল কারন Colestridium Tetani নামক জীবাণু। এটি অক্সিজেন ছাড়াও বেচে থাকতে পারে। লক্ষণ ও কারন বিশ্লেষণ করলে এই রোগকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
১) আঘাতজনিত ।
২) কাটা বা ক্ষতজনিত।
৩)অতিরিক্ত ঠাণ্ডা জনিত।
ধনুষ্টঙ্কার একটি স্নায়ুবিক রোগ। তাই এই রোগ নির্ণয় করতে হলে এর ইতিহাস শুনতে হবে ও লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
লক্ষণ ও কারনঃ
1) সামান্য শব্দ ও হাততালি দিলে সমস্থ শরীর কেঁপে উঠে।
২) খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দুর্বল হয়ে মারা যায়।
৩) কবুতর ঠিকমত মাথা তুলতেপারে না, মাথা হেট করে থাকে।
৪) ঘাড় শক্ত হয়ে যায় ও ছটফট করতে করতে শরীর ও ঘাড় বেঁকে গিয়ে মারা যায়।
৫) আঘাত লেগে বা কেটে গিয়ে ক্ষতসৃষ্টি হয়ে, ভিতরে জীবাণু প্রবেশ করে এই রোগে আক্রান্ত হয়।
৬) বাচ্চা ডিম থেকে ফুটার পর নাভি সংক্রমন থেকে বা স্যাঁতস্যাঁতে বাতি থেকে এই রোগ হয়।
৭) পুরানো লোহা, পেরেক ফুটে বা টিনে কেটে গিয়ে এই রোগ হতে পারে।
৮) অত্যন্ত গরমে,বা ঘাম বন্ধ হয়ে, ঠাণ্ডা লেগে এই রোগ হতে পারে।
৯) দেহ আস্তে আস্তে ঠাণ্ডা হয়ে অবশ হয়ে যায়।
১০) পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়।
১১)গায়ের লোম ও লেজ খাড়া হয়ে যায়।
১২) শ্বাস প্রশ্বাসে সাহায্য করে এমন পেশী শক্ত হয়ে যায়।
১৩)মাঝেমাঝে বিশেষ কিছু পেশীর অতিরিক্ত কম্পন অনুভূত হয়।
১৪) শিরদাঁড়া উত্তেজিত হয়েও এই রোগ হতে পারে।
১৫)অনেক সময় ঠোট বেকে যায়। শরীর ওবোশ হয়ে যায় ও দাড়াতে পাড়ে না।
১৬) রোগ অধিক হলে খিচুনির মতো অবস্থা হয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে মারাও যেতে পারে।
চিকিৎসা প্রতিরোধ ও অণুসাঙ্গিক ব্যবস্থাঃ
১) নীরব ও কম আলোসম্পন্ন ঘরে আক্রান্ত কবুতরকে রাখতে হবে যাতে,বাইরের কোন শব্দ না পৌছে।
২) মেরুদণ্ডের উপর এক টুকরা বরফ কাপড়ে পেঁচিয়ে হালকা করে প্রলেপ দিতে হবে।
৩) ক্ষতস্থান অ্যান্টি সেপ্টীক দিয়ে ধুয়ে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিতে হবে।
৪) তলপেটে একবার গরম ও ঠাণ্ডা শেক দিতে হবে। যাতে পায়খানা শুরু হয়।
৫) তরল খাবার দিতে হবে।
৬) চালের স্যালাইন দিতে হবে। (যদি১-৫ দিনের বাচ্চা হয় তাহলে ড্রপ দিয়ে ৪-৫ ফোটা করে খাওয়াতে হবে। আর অবশ্যই তা হালকা গরম হতে হবে।)
৭)বাচ্চা ডীম থেকে ফুটার পর অবশ্যই হেক্সীশোল বা পোভীশেফ দিয়ে ণাভী ভালো করে মূছে দিতে হবে।
৮) বাটী যাতে ভীজা না থাকে সে ব্যাপারেও খেয়াল রাখতে হবে।
৯) বাচ্চা হবারপর Tetanus বা ধনুষ্টংকার থেকে বাঁচতে হোমিও Hypericum 200 কুসুম কুসুম গরম পানির সাথে মিক্স করে কয়েক ফোটা খাওয়াতে হবে।
মনে রাখতে হবে অনেক সময় কোন লক্ষণ ছাড়াই বাচ্চা Tetanus বা ধনুষ্টংকার এ আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে। তাই সে থেকে মুক্তি পেতে হোমিও ঔষধ প্রতিরোধক হিসাবেও ব্যাবহার করা যেতে পারে। আর ডিম থেকে বাচ্চা ফুটার পর থেকে যদি একটু অতিরিক্ত যত্ন নেওয়া হয় তাহলে এই অনাখংকিত ঘটনা এড়ানো সম্ভব। এটা যে শুধু বাচ্চাদের হবে তাও ঠি কনা। পূর্ণবয়স্ক কবুতরেরও ডিম পাড়ার সময় বা অন্য যেকোন সময় ও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই সকল ক্ষেত্রেই সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি।

পাখির গ্রীষ্মকালীন পরিচর্যা

পাখির গ্রীষ্মকালীন পরিচর্যা নিতে বা গরমে পাখি সুস্থ রাখতে এবং হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা করতে করণীয় –
১| গরমকালে প্রতিদিন বা একদিন পর পর পাখিদের গোসল এর বাবস্থা রাখতে হবে . পাখিরা যেন ঠিকমত বসতে পারে এমন একটা মাটির বা প্লাস্টিক এর পাত্রে গোসলের পানি দিন|
২। পাখি নিজে থেকে গোসল না করলে হালকা করে স্প্রে করে দিন, খেয়াল রখবেন যেন কানে, নাকে, চোখে না যায়|
৩। মাসে ২-৩ দিন নিমপাতা সিদ্ধ পানি দিন গোসলের জন্য, যাতে পাখির শরীরে জীবানু সংক্রমণ না হয়|
৪। sunglasses emoticon গোসলের পানি দেয়ার সময় সকাল ১০ টা- ১২ টার মধ্যে হতে হবে যাতে পাখির ঠান্ডা না লাগে। পাখির গোসল হয়ে যাবার পর পর পানি সরিয়ে ফেলবেন|
৫। খাচা / এভিয়ারী যেন অতিরিক্ত গরম হয়ে না যায় সেইজন্ন্ন খাচা / এভিয়ারী এর বাইরে এক্ষ্হৌস্ত ফ্যান এর ব্যবস্থা করুন (নরমাল ফান না ). যদি গরম অনেক বেশি হয় এবং পাখির সংখ্যা অনেক বেশি হয় তবে একটা বড় মাটি/ স্টিল/অ্যালুমিনিয়াম এর পাত্রে পানি রেখে তার সামনে টেবিল ফান ছেড়ে দিন – বাতাস ঠান্ডা হবে এবং গরমের শুষ্কতা কমে যাবে।
৬। অনেক গুলা পানির পত্র দিতে হবে এবং পানি সকালে এবং বিকালে বদলে দিতে হবে। রাতে অবশ্যই খাচায় ফ্রেশ পানি দিয়ে রাখতে হবে|
৭। স্যালাইন /গ্লুকোস /ইলেক্ট্রোলাইট /অন্যান্য কেমিকাল- বেসড সাপ্লিমেন্ট এর পরিবর্তে ডাবের পানি / এলোভেরা সল্যুশন দিন – অনেক ভালো রেসাল্ট পাবেন| এলোভেরা সল্যুশন /ঘৃতকুমারীর দ্রবনঃ ১ চামচ ঘৃতকুমারী এর নরম শাস চটকে নিয়ে ১ কাপ / ২৫০ মিলি পানিতে ৬-৭ ফোটা লেবুর রস ও ১/২ চা চামচ খাটি মধু মিশিয়ে দ্রবণ তৈরী করুন | এই দ্রবণটি পরিষ্কার পানির পাত্রে পাখিকে খেতে দিন। এটি ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত পাখির খাঁচায় রাখা যাবে।
৮। বেশি গরমে অথবা ১ দিন পর পর অল্প কিচ্ছু শসা গোল করে কেটে পার্চ এর সাইড এ খাচার গ্রিল এর ফাকে গুজে দিন ।
৯। প্রতিদিন ১ টা শাক , ১ টা সবুজ সবজি, সপ্তাহে ২-৩ দিন মৌসুমী ফল এবং এলো ভেরা জেল এর টুকরা দিন । শাক/ লেটুস পাতা /অন্যান্য পাতা পানি সহ দিবেন কারণ অনেক পাখি ভেজা শাকে গড়াগড়ি করে গোসল করতে পছন্দ করে, এটা তাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
১০। তৈলাক্ত বীজ – সূর্যমুখী, তিল, সরিষা এর পরিমান কমিয়ে দিন|

কবুতরের রিং


  1. রিং! রিং!! রিং!!!
    অবাক হচ্ছেন ?? এটা কোন টেলিফোন বাজার শব্দ না। এটা কবুতরের পায়ে লাগানোর একটা ডিভাইস। যা আজ একটা ব্যাবসায়িক হাতিয়ারে পরিনত হয়েছে। আজকাল মানুষ রিং এর কথা শুনলেই পাগল হয়ে যায় আর তাই, যে কবুতর এর স্বাভাবিক দামের তা থেকে ৩ গুন ৪ গুন বেশি দামেও কিনতে পিছপা হয় না। কি এই রিং ? কি তাঁর মহাত্ত? আর কেনই বা এটা লাগানো হয়? এসব কিছুই অনেকেই জানেন না, কিন্তু তারপরও রিং এর প্রতি একটা অলিখিত টানে মানুষ ছুটে আসে এই রিং লাগানো কবুতরের কাছে। আর এই সুযোগে কিছু দু পয়সা কামিয়ে নিচ্ছে সেই সব চালাক অসাধু লোকজন। আর তাই রিং এর ব্যাবসাও বেশ রমরমা। কিন্তু আমরা কেউ কি আজ পর্যন্ত জানতে চেয়েছি বা জানার চেষ্টা করেছি কি এই রিং ? কেন এটা লাগানো হয় ? আর কি এর উদ্দেশ্য ? মনে হয় না। যদি তাই হত তাহলে এভাবে আমরা রিং পিছনে ছুটতাম না। এইতো কিছুদিন আগে নেটে একজন নামকরা কবুতর ব্যাবসায়ি একটা স্ত্রেসার এর বিজ্ঞাপনে লিখলেন রিং এর জোড়া, ভাল ব্লাডলাইন, ইত্যাদি কিন্তু দেখা গেল সেই জোড়াটা ফাটা, তারপর কিভাবে রিং বলে চালানোর চেষ্টা করা হল ? কারণ সে জানে যে, আমরা রিং শুনলেই দৌড় দিব। আর এই সব ব্যাবসায়িরা সে অপেক্ষাই করে। অনেকেই গর্ব ভরে বলে থাকেন আমার একটা রিং পেয়ারের বাচ্চা কিনেছি। আসলেই কি তিনি এ ব্যাপারে সঠিক খোঁজ নেবার চেষ্টা করেছেন যে, আসলেই কি সেটা রিং এর জোড়া। নাকি অন্য কিছু। আমাকে একদিন একজন জানালেন যে তাঁর একটা রিং এর পেয়ার আছে তাকে জিজ্ঞেস করলাম ভাই, রিং এর পেয়ার বলতে কি বুঝেন ? তিনি জানালেন যে, যার কাছ থেকে কিনেছি তিনি বলেছেন যে এটা রিং এর পেয়ার! কি আশ্চর্য! এর কি কোন ই প্রতিকার নাই। হা আছে। কিভাবে? শুধু আপনাকে সচেতন হতে হবে। এর আগেও রিং বা ব্যান্ড নিয়ে সংক্ষেপে লিখা হয়েছে। কিন্তু মনে হয় সেটা যথেষ্ট হয়নি।
    এখন আসুন আবার আমরা একটু জেনে নেই রিং কি ? কেন রিং পরানো হয় ? আর কি এর উদ্দেশ্য ? সাধারণত একটি ধাতু, প্লাস্টিক, ব্যান্ড যা একটি সজ্জা বা প্রবৃত্তি বা একটি টোকেন হিসাবে আঙুল বা পায়ের ভিতর নিবদ্ধ থাকে বা রাখা হয়। অন্যভাবে বলা যায় যে পরবর্তী প্রজন্ম সনাক্ত করার জন্য একটি রিং অথবা ক্লিপ যা পাখি বা কবুতর খামার বা মালিকের পরিচিতি বহন করে থাকে। অনেক সময় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ও সবচেয়ে ভালো জাতের কবুতর বা পাখিকে প্রতিযোগিতা আয়োজক কমিটি কবুতর বা পাখির মালিককে নির্দিষ্ট সনদপত্র সহ একটি নাম্বার খচিত রিং লাগানো মালা প্রদান করে, ফলে সেই কবুতরের মালিক সেই রিং নাম্বার দিয়ে তাঁর কবুতরের পরবর্তী প্রজন্মকে সেই নাম্বার অনুযায়ী রিং পরায়। অনেক সময় রেস কবুতর যাতে হারিয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রেখে মালিকের সেল নাম্বার খচিত রিং বা রেজিঃ নাম্বার দিয়ে রিং পরায়। যা পরবর্তীতে সেই কবুতরকে খুজে পেতে সাহায্য করে থাকে। অনেক সময় কোন খামারের পরিচয় বা ব্যাক্তি পরিচয় রিং এর মধ্যে প্রকাশ করা হয়। আবার অনেক সময় রেস কবুতরের রক্ত পরিচয় মনে রাখার জন্য খামারি তাঁর একটা নিদিষ্ট পরিচয় নাম্বার রিং এ লিখে তাকে পরিয়ে দেয়। এভাবেই রিং এর সুত্রপাত হয়। সৌখিন কবুতরের রিং মুলত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সেরা জাতের নিদিষ্ট চরিত্রের কবুতরকেই দেওয়া হয়। বাংলাদেশের বাইরে এই ধরনের নিয়মিত প্রতিযোগিতা হলেও, আমাদের দেশে এই ধরনের প্রতিযোগিতা সচারচর দেখা যায় না। কিন্তু তারপরও রিং এর ছড়াছড়ি। নিদিষ্ট জাতের না হয়ে ও আমরা অবলিলায় লিখে দিই রিং এর জোড়া, বা রিং এর পরিবার থেকে ইত্যাদি, ইত্যাদি। এটা আমাদের দেশে অহরহ ঘটে কারণ, আমাদের দেশে কবুতরের কোন শক্তিশালী সংগঠন নাই। যদি থাকত তাহলে এটা কোন কালেই কারো পক্ষে এই ধরনের কাজ করা সম্ভব হত না।
    আমাদের সকলের উচিৎ যদি আমদানি কৃত ব্র্যান্ড কবুতর না হয় বা আমদানি কৃত ব্র্যান্ড কবুতরের বাচ্চা না হয়। তাহলে আপনার খামার বা আপনার নিজস্ব পরিচয় বহন কারী রিং লাগানো। যাতে পরবর্তীতে সেই ব্রীড আপানার খামারের পরিচয় বহন করে। অনেকে আবার রিং পরাতে গিয়ে কবুতরকে একটা মহা যন্ত্রণাদায়ক অবস্থার মধ্যে ফেলে। তাই আপনাকে এ ব্যাপারে কিছু নিদিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে।
    আপনি যেহেতু আপনি ম্যানুয়াল রিং পরাবেন তাই আপনাকে নিম্নোক্ত কাজ নিশ্চিত করতে হবেঃ
    ১) ডান পায়ের উপর রিং লাগাতে হবে।
    ২) কবুতর কে উল্টায়ে রিং পরাতে হবে আর খেয়াল রাখতে হবে যাতে রিং এ অধিষ্ঠিত অক্ষর পাঠ যোগ্য হয়।
    ৩) ডান পায়ের নেভিগেশন রিং রাখুন ও বা পায়ে রেসিং এর জন্য ব্যাবহ্রিত রিং মুছে ফেলা বা খুলে ফেলা নিশ্চিত করুন।
    ৪) ৫ থেকে ৭ দিনের জন্য রিং বা ব্যান্ড লাগানো উচিৎ, যাতে ব্যান্ড লাগানো সহজ হয়। আর আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যেন রিং বা ব্যান্ড বেশি টাইট না হয় বা বেশি ঢিলা না হয়।
    ৫) রিং বা ব্যান্ড লাগানোর সময় আপনাকে পিচ্ছিল কারক পদার্থ ব্যাবহার করা উচিৎ বা মেশিন ব্যাবহার করতে হবে আর খেয়াল রাখতে হবে যাতে লাগানর সময় পা তে না যায়। এতে পায়ে ধনুষ্টংকার বা bumble foot হবার সম্ভাবনা থাকবে।
    ৬) মেটাল বা প্লাস্টিক যে কোন ধরনের রিং হোক না কেন নিয়মত পাদদেশ মুছা এবং পরিষ্কার অথবা ময়লা হলে ভালো কিছু পরিস্কার পদার্থ দিয়ে পরিস্কার করা নিশ্চিত করুন।
    ৭) যেসব কবুতরের পায়ে বেশি লোম বা মোজা হয় তাদের রানের মধ্যে রিং বা ব্যান্ড লাগানো উচিৎ যাতে লোম ছিড়ে যাবার ভয় না থাকে।
    ৮) রিং বেশি টাইট হলে কেটে ফেলা নিশ্চিত করতে হবে। আর খেয়াল রাখতে হবে যাতে কবুতর রিং বা ব্যান্ড লাগানো পা উঠিয়ে না রাখে। তাহলে বুঝতে হবে যে আপনার কবুতরের রিং বা ব্যান্ড এ সমস্যা হচ্ছে।
    যাই হোক আশাকরি ও মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করি যে, রিং বা ব্যান্ড নিয়ে যে তেলেসমাতি আমাদের দেশে চলছে বা চলে আসছে তা অচেরেই বন্ধ হবে, মানুষের সচেতনতা বাড়বে, রিং নিয়ে যে ভুল ধারনা আছে, তা কেটে যাবে। আর যেসব মানুষ এই সব নিয়ে ব্যাবসা করছে তাদের বোধগম্য হবে, মানুষ ঠকানোর প্রবণতা বন্ধ হবে। (আমিন)

কবুতরের /পাখির মল দেখেই জেনে নিন অসুস্থতার লক্ষণ

আপনি আপনার পাখির বা কবুতরের অভিভাবক তাই, আপনার পাখির জন্য কোনটা ভাল কোনটা মন্দ এটা আপনি ছাড়া অন্য কেউ ভালো বুঝতে পারবে না, ঠিক যেমন আপনার সন্তানের বেলাতে যেমনটি ঘটে থাকে। তবে পার্থক্য হল যে পাখির অসুস্থতা মানুষের মত বুঝা যায় না। আর এটা বুঝার জন্য প্রতিদিন মল নিরীক্ষনের দ্বারা আপনি আপনার পাখির স্বাস্থ্য সম্বন্ধে নিশ্চিত হতে পারেন। আর এটার জন্য প্রথম দিকে যদি একটু সময় ব্যয় করতে হয়, তাহলে তাই করুন। কিন্তু আপনাকে তা করে যেতেই হবে। কারন আপনিযদি যথেষ্ট ভাবে এই অধ্যয়ন করেন, তাহলে হয়ত এর সাথে পরিচিত হয়ে একদিন আপনার কবুতরের জীবন বাঁচাতে পারবেন । আপনাকে অবশ্যই একবার সকালে এবং আবার সন্ধ্যায় এক নজর খেয়াল রাখতে হবে যা আপনার পাখি সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। আর এই ক্ষেত্রে আপনি নিয়মিত ভাবে খাঁচার নীচে প্রতিদিন poopy কাগজ পত্র পরিবর্তন করুন বা প্লেইন নিউজপ্রিন্ট কাগজ গামছা বা পরিষ্কার মোম কাগজ ব্যবহার করুন,যাতে poop Detecting সহজ হয়।
পাখি অসুস্থতা গোপন করার চমৎকার ঊপায় জানে, কিন্তু আপনার কাছে তা এড়াবে না কারণ আপনার পাখি এর ড্রপ দেখে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার পাখি অসুস্থ যা গোড়ার দিকে সূচক এক হতে পারে। আপনার পাখি এর মল-কম্পোনেন্ট বা উপাদান, মূত্র কম্পোনেন্ট বা উপাদান এবং ইউরিক অ্যাসিড কম্পোনেন্ট বা উপাদান আছে। তিনটি উপাদানের যে কোন পরিবর্তনের গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করা উচিত এবং যা আপনারপাখি অসুস্থ ইঙ্গিত হতে পারে।
আপনার poop ট্রে এর একটি অংশ হিসাবে , আপনি আপনার পাখি এর খামাড় এলাকা এবং cloaca (পেছন পাশ) , বা পেশী উপর নজর রাখতে পারেন। যদি খামাড় এলাকা সবসময় পরিষ্কার ও শুকনো থাকতে হবে এবং cloaca কোন বিজোড় growths সঙ্গে মোটামুটি অভেদ্য থাকে। এক্ষেত্রে যদি আর্দ্রতা এলাকায় জট পাকানো stools বা অতিরিক্ত টিস্যু থাকে তাহলে অবিলম্বে চিকিত্সা করাতে হবে।

অস্বাভাবিক কবুতর মল :
১) বর্ধিত আকার।(যদিও ডিমে তা আদি ও মাদী কবুতর ডিম থেকে উঠে বেশী পরিমান মল করতে পারে।)
২) ভারী , তৈলাক্তমল বা আমাশা ভাব।
৩) সবুজ আভা বা Discolored বা ঘন সবুজ, খাকীi থেকে যে কোনো রঙ হতে পারে।
৪) প্রায় ই ভিজা হয়।
৫) সাধারণত গন্ধ বহন করে।
৬) আলগা মল ( মানসিক চাপ, রোগ, অথবা নির্দিষ্ট খাবার কারণেও হতে পারে।), অথবা undigested বীজ ধারণ করে ফোঁটাফোঁটা করে রোগের চিহ্ন হতে পারে। এছাড়াও মল এর রং পরিবর্তন হতে পারে।

স্বাস্থ্যকর বার্ডমল :
১. অল্প ও সংগে সাদাসাদা অংশ।
২. সাধারণত এটি সংযুক্ত একটি ডাউন পালক আছে.
৩. এটি পার্শ্ববর্তী অংশে কোন ভিজা কোন চিহ্ন থাকবে না।
৪. কোনগন্ধ থাকবে না।
আপনার পাখি এর মল এ১) মল উপাদানঃ২) প্রস্রাব উপাদানঃও৩) ইউরিক অ্যাসিড উপাদানঃএই তিনটি উপাদান থাকবে। তিনটি উপাদানের যেকোন একটির পরিবর্তনের আভাস গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করা উচিত যা আপনারপাখির অসুস্থ হবার ইঙ্গিত হতে পারে।

মলের তিনটি উপাদান. 
১) মল উপাদানঃ
মল গ্যাস্ট্রোইন টেস্টাইনাল নালীর থেকে আসে এবং সাধারণত একটি সবুজাভ দড়ি বা blob বা ক্ষুদ্র বড়ির মত হয়। পাখি এর ফোঁটাফোঁটা এইঅংশ এর খাদ্য দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং আমূল খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের সঙ্গে পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শাকসবজি stools সবুজ বর্ণ হতে পারে যখন উদাহরণ স্বরূপ, গ্রিত stools লাল করতে পারে। কিছু বাণিজ্যিক খাদ্যমধ্যে Colorants এছাড়াও stools রং পরিবর্তন করতে পারে। রঙ পরিবর্তন প্রায়ই অপ্রাসঙ্গিক, কিন্তু stools কালো হয়ে বা একটি শক্তিশালী বা অস্বাভাবিক গন্ধ থাকে তাহলে পাখি মালিকদের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত।
মল মধ্যে বা Feces ( কঠিন নলাকার অংশ)
• ব্ল্যাক/ কালো অথবা Tar মত: পুরাতন রক্ত নির্দেশ করে থাকে। অভ্যন্তরীণ রক্তপাত বা অভ্যন্তরীণ আঘাত যার ফলে যে সম্ভাব্য পাকস্থলিতে কিছু গ্রহণ করার পর।
• বর্ধিত Urates বা বেশী পরিমান সাদা অংশঃ Bacillary diseases, Dehydration বা সম্ভব কিডনি সমস্যা ( dehydration ভুগছেন এমন পাখি তাদের চোখের চারপাশে crinkly চামড়া থাকতে পারে dehydration নির্ণয় আরেকটি উপায় হল। তাদের চামড়া চিম্টি হয় নিরূদ চামড়া অর্থাৎ চামড়া চিমটি দিলে কয়েক সেকেন্ডের জন্য tented থাকবে। )
• মটর সবুজ: যকৃতের ক্ষতি করা বা শাল্মনিল্লা রোগ।
• সাদা বা ক্লে রঙ: অগ্ন্যাশয় বা পরিপাক সমস্যা।
• সবুজাভ বা Greyish Watery মল বা হলুদ :ককসিডি ও সিস , আমাশা ইত্যাদি সম্ভাবনা।
• ডেলা-পাকানো বা হজম করা হয় নাই এমন Undigested খাদ্য: অসম্পূর্ণ হজম, Giardia , hypermotile intestine ইত্যাদি রোগ সম্ভাবনা।
মনে রাখতে হবে অনেক সময় কিছু খাবার আছে, যার কারনে ও মল এর রং বিভিন্ন হতে পারে। যেমনঃ রেজা, গ্রীনপিস, মাসকলায় ইত্যাদি আবার গ্রিট এর কারনে লাল হতে পারে এবং এই অবস্থায় কখনও অ্যান্টিবায়টিক বা অন্য কোন ঔষধ দেয়া ঠিক না।

২) প্রস্রাব উপাদানঃ
অপেক্ষা কৃত পরিষ্কার, watery প্রস্রাব অংশ আপনার পাখি এর কিডনি দ্বারা উত্পাদিত হয়। যদিও কবুতরের মুত্র থলি নাই। পাখি এর ফোঁটাফোঁটা পানি পরিমাণ সরাসরি আপনারপাখি যে খাবার জল পান করে তার দ্বারা প্রভাবিত হয়। প্রস্রাব urates নামক একটি স্ফটিক প্রস্রাব দ্বারা গঠিত একটি পরিষ্কার অংশ urates( chalky সাদা অংশ)।এটিকে অস্ফটিক প্রস্রাব(অপরিষ্কার জল ) বলা হয়। কখনও কখনও মুত্র এবং Urates একত্রিত হয়ে একটি মেঘলা তরল গঠন এর মত দেখায়। এই পরিবর্তন গুলি রঙ পরিবর্তনএবং পরিমাণ ভিজা stools শুকনো খাবার সঙ্গে শোষক হওয়া উচিত। ফোঁটাফোঁটা মধ্যে স্থায়ী রূপে প্রচুর পরিমাণে জল উপস্থিত গুরুতর রোগ হিসাবে চিহ্নত হতে পারে এবং আপনি আপনার পশুচিকিত্সক সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত্। একটা কথা মনে রাখতে হবে পায়খানার সাথে সাদা অংশ মানেই কিন্তু রোগ না আর এই ব্যাপারে একটু খেয়াল রাখবেন।
Urates ( chalky সাদা অংশ যা fluid বলাহয় ) এর পরিবর্তে যদি নীচের রঙ হয়ঃ
• সবুজ: যকৃতের রোগ বা ক্ষুধা হীনতা
• হলুদ : যকৃতের রোগ বা ক্ষুধাহীনতা
• বাদামি: সম্ভাব্য বিষক্রিয়া।
• লাল: তাজা অভ্যন্তরীণ রক্তপাত (পরিপাক নালীর সঙ্ক্রিনতা) অথবা কিডনি রোগ।
• বাড়তি মুত্র: জল বা রোগ উচ্চখাবার খাওয়া বা অনেক পান করা (ব্যাকটেরিয়া মাত্রাধিক্য নির্দেশ করে।)

৩) ইউরিক অ্যাসিড উপাদানঃ
আপনারপাখি এর ফোঁটাফোঁটা সাদা / ক্রীম রঙের ইউরিক অ্যাসিড অংশ স্বাস্থ্য এর একটি খুবগুরুত্ব পূর্ণ সূচক। ফোঁটাফোঁটা এই ভাগে ব্যতিক্রম ছাড়া সাদা বা রঙ সাদা কাছাকাছি হতে হবে। চুন সবুজ, উজ্জ্বল হলুদ , সরিষা শ্যাম বর্ণ, ফ্যাকাশে ব্রাউন এবং ইটলাল পরিবর্তন গুলি গুরুতর অসুস্থতা সাধারণ লক্ষণ। স্বাভাবিক অবস্থায় কোন পরিবর্তন অবিলম্বে তদন্ত করা উচিত।
বুঁদবুঁদপূর্ণ মল ভালো নাঃ
যে কোনো বুদবুদ বা ফেনা ধারণ করে ফোঁটাফোঁটা সম্ভবত যেমন clostridium সংক্রমণ হিসাবে ধরা হয়।(যেমনঃডায়রিয়া, রক্ত আমাশা, জ্বর ইত্যাদি)
• tapeworms এবং roundworms মত বাস্তব কৃমি জন্য সন্ধান করতে ভুলবেন না
নিম্নলিখিত লক্ষণ তারা অস্বাভাবিককারণ, জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন হয় আর এই লক্ষণ একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা নির্দেশ করতে পারেঃ
১) দীর্ঘায়িত molt বা pinfeathers এর ক্রমাগত উপস্থিতি।
২) ভাঙ্গা, ন্যুব্জ , বাছাই করা বা পালক চিবান।(তবে বাসা বানানর সময় এটা করতেপারে।)
৩) অস্বাভাবিক বা ভোঁতা পালকের রঙ।
৪) মুখ বা পেছনে প্রায় পাংশুল পালক।
৫) Nostrils অথবা কাছাকাছি খোলস যুক্ত বা কর্কশ উপাদান।
৬) চোখের চারপাশে লাল ভাব ফুলে বা পালক ক্ষতি, কেশবির লতা।
৭) চামড়া বা ঠোঁটের উপর মচমচে অসম্পূর্ণ অংশ।
৮)পায়ের নীচে ক্ষত।
৯)শরীরের ওজন খোঁড়া বা নাড়াচাড়া।
১০)ঠোঁট বা নখ এর অতি বৃদ্ধি।
১১)ডাকে বা কামড়ে বা খাদ্যাভাস মধ্যে ছোটখাটপরিবর্তন।
১২)প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস।
জরুরী প্রাথমিক চিকিৎসাঃ
আপনার খামারে পর্যাপ্ত তাপএবং খাদ্য, অসুস্থ পাখি অস্থায়ী যত্ন জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করাহয়। পাখি শান্ত রাখা উচিত এবং হ্যান্ডলিং ন্যূনতম করা উচিত। তাপ : একটি কক্ষ তাপমাত্রায় ৮৫– ৯০ ফাঃ রাখা উচিৎ ও অসুস্থ পাখি জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা উচিত। খাঁচার দিকে বা মেঝে বরাবর একটি গরম প্যাডস্থাপন এবং towels সঙ্গে একটি কম্বল বা খাঁচা কভার সম্পূর্ণ খাঁচা draping দ্বারা তৈরি করা যেতেপারে। একটি 60 – Watt হালকা একটি বিকল্প তাপ উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কোনো খাঁচা কভার আলো / তাপ উৎস স্পর্শ করে না তা নিশ্চিত করুন। পাখি দ্রুত শ্বাস শুরু করে বা বা তার শরীর থেকে তার পাখা ঝুলে যায় তাহলে বুঝতে হবে তাপমাত্রা উচ্চ হয়েছে। রুম হিটার বিশেষ ধরনের (যেমন, কেরোসিন ) এড়িয়ে চলা উচিত। একটি অসুস্থ পাখিকে যথাসাধ্য খাদ্য খাওয়ানোর চেষ্টা করা উচিৎ আর সেটা তরল হলে ভাল। খাদ্য পাত্র পাশে স্থাপন করা উচিত। অচেতন বা অজ্ঞান পাখি খাওয়ানোর প্রচেষ্টা করা যা বেনা। এন্টিবায়োটিক,এলকোহল বা তেল দেবেন না। পাখি আগামীকাল কিভাবে যায় দেখতে অপেক্ষা করবে ননা। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শেষমুহূর্তে রোগের চিকিৎসা করতে দেখা যায়,ফলে তার ফলাফল ভাল হয় না।
ময়না তদন্তঃ
খামারে যদি কোন পাখি মৃত পাওয়া যায় তাহলে শরীরের পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পরীক্ষার জন্য প্লাস্টিকের ব্যাগ রাখা উচিৎ। সম্ভবত মৃত্যুর কারণ সনাক্ত করার জন্য একটি এভিয়ান পশু চিকিত্সক থেকে গ্রহণ করা উচিত। এই কবুতর পরিবারের অন্য সদস্য ও বাড়িতে অন্যান্য পাখি স্বাস্থ্যও নিরাপত্তা রক্ষা করা জরুরী।
পরিশেষে বলা যেতে পারে যে সাধারন অবস্থায় অনেকে চিকিৎসা দিতে দিরে করেন বা কাজের ওজুহাতে খাওয়া বা পানির দিকে নজর দেন কম বা ২৪ঘণ্টার জন্য খাবার ও পানি দিয়ে যান। কিন্তু মনে রাখতে হবে। জে খাবার ও পানি আপনি দিচ্ছেন তা ময়লা হতে পারে,আর এই ময়লা খাবার থেকেই যত রোগের সুচনা। তাই যদি আপনি সত্যিকার কাবুতর প্রেমী হন তাহলে কিছু সাধারন দায়িত্ব পালন করুন আর তা না হলে কবুতর বা পাখি পালা ছেড়ে দিন। শুধু লোক দেখানর জন্য এটা করবেন না। কারন আপনার অবহেলা/অমনোযোগিতা/গাফলতির কারনে যদি কোন কবুতর বা পাখি মারা যায় তাহলে হয়তো একদিন আপনাকে এর জন্য স্রষ্টার কাছে জবাব দিহি করতে হতে পারে।

কোয়েল পালন সম্পর্কিতপ্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ  কোয়েল কত দিনে ডিম দেয় ? উত্তরঃ  কোয়েল পাখি সাধারনত ৪৫ দিন বয়স থেকে ডিম দিতে শুরু করে । তবে বাস্তবে প্রায় ৫৫ - ৬০ দিন সময় লেগে ...