Sunday, January 27, 2019

কবুতরের শস্য আটকানো / টক খাদ্য / বড় হাপর(Big Blowers) রোগ

সধারনত কবুতরের শস্য আটকানো / টক খাদ্য / বড় হাপর(Big Blowers) রোগ এর চিকিৎসার থেকে প্রতিকারের ব্যাবস্থা করা ভালো। কারন, দেখা গেছে ৯০% ভাগ টক খাদ্য(sour crop) সমস্যা তৈরি হয় পাখির অধিক খাদ্য গ্রহনের ফলে। আর বিশেষ করে অধিক পরিমান পানির গ্রহনের ফলে এটা বেশি হয়। সাধারণত বড় আকারের ফসল খাবার খেলে এটা হবার সম্ভাবনা একটু বেশী থাকে । এটা যদি খাবারের বরাদ্দ অংশ নির্দিষ্ট করে দেয়া হয় এবং ছোট আকারের খাদ্য দেওয়া হয় তাহলে এর ধরনের সমস্যা হবার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। এই ধরনের সমস্যায় সাধারণত স্ফীত বক্ষ পারাবত (বিশেষ কবুতর বা Pouter) বেশী ঝুকির মধ্যে থাকে।
কারনঃ এই সমস্যাটা তৈরি হয় মুলত যখন খাবার ও পানি শেষ হয়ে যায় ও দীর্ঘসময়, কোন প্রকার খাবার ও পানি সরবরাহ না করা হয়। আর এরপর যখন খাবার দেওয়া হয় তখন তারা পাকস্থলীর পূর্ণ করে খায় ফলে এর মধ্যে খাদ্যাদিও পানির ভারে পাকস্থলী ঝুলে পরে ও হজমের অসুবিধা হয়। অনেক সময় ধান বা এই জাতীয় খাবার পাকস্থলীর মধ্যে আটকে গেলে পরে সংক্রমণ হয়ে এটা হয়। আবার প্রজননের সময়ও দুধ উন্নয়নশীল পাখি/ কবুতর থেকে ঘটতে পারে। অনেক সময় নর মাদিকে ডিম পারার সময় তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়, এই সময় মাদী ঠিকমত খেতে ও পান করতে পারে না। আর হটাৎ করে খাবার সুযোগ পেলে বা ডিমে তা দেবার সময় ডিম থেকে অনেকক্ষণ পর উঠে গাণ্ডে পিণ্ডে খেলে এই সমস্যা হতে পারে। তবে ব্রিডিং জোড়ার ক্ষেত্রে নরকে আলাদা করে বা ডিমে তা দিবার সময় বানর দ্বারা মাদিকে উত্তেজিত করার সময় আলাদা করে, যদি নির্দিষ্ট পরিমান খাবার দেওয়া হয়। স্ফীতবক্ষ পারাবত বিশেষ (Pouter) কবুতরকে ঘনঘন খাবারের বরাদ্দ অংশ নির্দিষ্ট করিয়া দেয়া হয়। তাহলে এই ধরনের সমস্যা থেকে নিরাপদ থাকবে। মনে রাখতে হবে যে, যদি খাবারের ক্ষেত্রে এই ব্যাবস্থা না নেয়া হয় তাহলে ২-৩ দিনের মধ্যে sour crop হতেপারে।
প্রতিরোধ ও প্রতিকারঃ খামারিকে কখনই এই ধরনের খাবারের ব্যাপারে বিধি নিষেধ আরোপ করা ঠিক না। এক্ষেত্রে কবুতর(Pouter)যদি সবসময় খাবার ও পানি সরবরাহ করা হয়, আর যদি তারা সবসময় হাতের কাছে খাবার ও পানি পায় তাহলে তাদের খাবারের ব্যাপারে তেমন আগ্রহ থাকবে না , যেমন অনেকক্ষণ পর দিলে থাকে। তবে এর ব্যাতিক্রম ও হতে পারে। আর এই কারনে খামারে বিভিন্ন উৎসে খাদ্য মজুদ থাকা উচিৎ। খাদ্য আবদ্ধ হয়ে বা (ওভারলোড) হয়ে পাকস্থলীতে তা পচে বা টক খাদ্য(sour crop) হবার আগেই অবিলম্বে এর চিকিত্সা করা উচিত। প্রথম উপসর্গ হিসাবে একটি নিস্তেজ হবে। তারা চেহারায় একটা দুঃখিত বা অসুস্থতার ভাব নিয়ে এক কোনে চুপ করে বসে থাকে। যেহেতু তাদের পাকস্থলী খাবারে পূর্ণ থাকে তাই তারা আর খাবার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ দেখায় না। আর এই সময় চিকিত্সা করা না হলে কয়েক দিনের মধ্যেই মারা যায়। সাধারণত তাদের মুখের উপর দু:খিত বর্ণ থাকে সেই সঙ্গে কোণে বসে থাকে এবং মাত্রাতিরিক্ত ভারী ফসলের কারণে ডাউন ডিম্ব প্রসার হয়। সম্ভবত এই সময়ে তাদের তেমন খাওয়া হয় না এবং চিকিত্সা করা না হলে কয়েক দিনের মধ্যেই মারা যাবে। তখন তারা চেহারায় একটা দুঃখিত বা অসুস্থতার ভাব নিয়ে এক কোনে চুপ করে বসে থাকে। যেহেতু তাদের সাধারণত কবুতরের পাকস্থলী পানিতে পরিপূর্ণ থাকে তাই একে উল্টিয়ে বুকে হালকা চাপ দিয়ে পানি বের করে দিতে হবে। যদি পাকস্থলী খাদ্য শস্য বা ক্ষুদ্র দলা ধরনের কোন কিছু দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে তাহলে হালকা উষ্ণ গরম পানির সাথে probiotics মিক্স করে পরিষ্কার করতে হবে। অথবা অ্যাপেল সিডার পানির সাথে মিক্স করে flush করতে পারেন অথবা অল্প একটু বরিক পাউডার পানির সাথে মিক্স করে flush করতে পারেন। খাবার জমে থাকার ফলে পাকস্থলী ব্যাকটেরিয়া তৈরি হতে পারে অথবা রোগের আধিক্যে Doxivet 1 Gram পানির সাথে মিক্স করে অথবা ৩০সিসি পানির সাথে ১ গ্রাম বেকিং সোডা মিক্সকরে flush করতে পারেন।এভাবে২-৩ বার পূর্ণকরে flush করতে হবে। flush এর জন্য আপনি বড়(গাড়ির battery তে পানি দেবার সময় যে ড্রপার ব্যাবহারও করা হয়।) ড্রপার ব্যাবহার করতে পারেন। যদি কবুতর বড় দানা খাদ্য খেয়ে থাকে তাহলে এটা খুবই কঠিন হয় বের করে আনা। আর এটি বেশী ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়। এই অবস্থায় কবুতর পানি শূন্যতায় ভুগতে পারে তাই তাকে স্যালাইন পানি দিতেপারেন,যাতে পানি শূন্যতা দূর হয়। যদি কবুতরের হাপর( Blowers) বড় হয়ে যায় তাহলে, তা একটা কাপড় দিয়ে হাড় ভাঙ্গা রুগীর মত গলার সাথে বেঁধে রাখতে হবে। যেন এটা ঝুলে না থাকে। এই অবস্থা সেরে যাবার পরও চামড়া তা ঝুলে থাকে আর এই অবস্থায় চামড়াটা ধরে রাবার ব্যান্ড দিয়ে বেঁধে দিতে হয়। জরুরী ভাবে মনে রাখতে হবে যেন আটকানো খাবার কোন মতেই ভিতরে না থাকে।
এ পর্যায়ে তা অবিলম্বে আবর্তক(Recurring) থেকে এটি প্রতিরোধ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
পাকস্থলী খাদ্যশস্য বা ক্ষুদ্র দলা থেকে পরিষ্কার হবার পরপরই আবার প্রচণ্ড খুব ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত হবে, তাই তাদের যদি অবিলম্বে আবার খাবার সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে এই ঘটনা পুনরায় ঘটবে।
ধরুন আপনি সকালে কবুতরটিকে কয়েকবার flush করে খামারে ফিরিয়ে দিলেন আর এই ঘটনা যদি আবার ঘটে তাহলে এটা দোষ সেই প্রাণীটিকে দিব না এর জন্য আপনি দায়ী থাকবেন। পাখি পরিপূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত অল্প পরিমান খাবার ও পানি একাধিক বার দিতে হবে। তবে তরল খাবার দেওয়াটা উত্তম। মনে রাখতে হবে এটি সাধারণতঃ সারতে কয়েক দিন সময় লাগে।

No comments:

Post a Comment

কোয়েল পালন সম্পর্কিতপ্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ  কোয়েল কত দিনে ডিম দেয় ? উত্তরঃ  কোয়েল পাখি সাধারনত ৪৫ দিন বয়স থেকে ডিম দিতে শুরু করে । তবে বাস্তবে প্রায় ৫৫ - ৬০ দিন সময় লেগে ...