কোয়েল খামার করার জন্য কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে-
- খামার টি অবশ্যই পূর্ব-পশ্চিম বরাবর লম্বা হতে হবে।
- খামারটি প্রস্থে ১৫ ফুটের বেশি হওয়া উচিত নয়।তবে লম্বায় পূর্ব-পশ্চিম বরাবর যত খুশি বড় করা যেতে পারে।কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যে,সর্বোচ্চ ২০ ফুট পরে পরে বেড়া দিয়ে খোপ খোপ করে দুই বা ততোধিক রুমে ভাগ করে নিতে হবে।
- অবশ্যই খামারের চারিদিকে খোলামেলা রাখতে হবে যেন আলো ও বাতাস চলাচল করতে পারে।
- খামার টি এমন জায়গায় করতে হবে যেন সূর্যের আলো খামারে প্রবেশ করতে পারে।
- খামারে যেন ইঁদুর বিড়াল ঢুকতে না পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
- খামারের চারিদিকে পর্দা লাগানোর সিস্টেম থাকতে হবে।তবে পর্দার সিস্টেম এমন হতে হবে যেন-পর্দা দেয়ালের নিচ থেকে খামারের ভেতর থেকে রশি দিয়ে টেনে টেনে উপরের দিকে তোলা যায়। অর্থাৎ পর্দা উপর থেকে নয়; নিচ থেকে লাগাতে হবে।কারন খামারের সৃষ্ট গ্যাস হালকা বলে তা উপর দিয়ে বের হবে কিন্তু উপরে যদি পর্দা দিয়ে আটকানো থাকে তবে গ্যাস বের হতে পারে না।
- অতিরিক্ত গরমে ফ্যান ও শীতে তাপ দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- পর্যাপ্ত খাবার ও পানির পাত্র থাকতে হবে।
- খামারে ব্যবহৃত নেট লোহার বা জি আই তারের না হয়ে বর্তমানে প্লাস্টিকের নেট পাওয়া যায়-এগুলা চারিদিকের নেট হিসেবে ব্যবহার করলে ভাল হবে।কারন প্লাস্টিক রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হয় না।
কোন পদ্ধতিতে কতটুকুজায়গা লাগবে
লিটার পদ্ধতিতে সাধারনত জায়গা বেশি লাগে কিন্তু খাঁচায় পালন করলে জায়গা কম লাগবে।
লিটারে জায়গা বরাদ্দঃ
লিটার পদ্ধতিতে প্রতি বর্গ ফুট জায়গায় ৫-৬ টি পূর্ণ বয়স্ক পাখি পালন করা যাবে।
খাঁচায় জায়গা বরাদ্দঃ
খাঁচা পদ্ধতিতে প্রতি বর্গি ফুট জায়গায় ৭-৮ টি পূর্ণ বয়স্ক পাখি পালন করা যায়।
বর্গ ফুটের হিসাব হচ্ছে আপনার খামার বা খাঁচার দৈর্ঘ্য(ফুট) আর প্রস্থ(ফুট)গুন করলে যেটা বের হবে সেটাই বর্গ ফুট।
উদাহরনঃ
আপনার খামারের দৈর্ঘ্য ১৫ ফুট আর প্রস্থ ১০ ফুট।
তাহলে টোটাল জাগয়ার পরিমাণ হবে=১৫ X ১০ = ১৫০ বর্গ ফুট।
আর এই ১৫০ বর্গ ফুটে আপনি পূর্ণ বয়স্ক পাখি রাখতে পারবেন প্রায়=১৫০X ৬=৯০০ টি
আবার খাঁচা পদ্ধতি হলে, আপনার খাঁচার দৈর্ঘ্য ৬ ফুট আর প্রস্থ ৩ ফুট হলে প্রতি তলার জায়গা হবে=৬ X৩=১৮ বর্গ ফুট।
এই ১৮ বর্গ ফুটে পাখি রাখা যাবে=১৮X ৮=১৪৪ টি।
এখন খাঁচাটি ৫ তাক বিশিষ্ট হলে মোট পাখি ধরবে= ৫ X ১৪৪=৭২০ টি।
কোয়েল পালনের উদ্দেশ্য
সাধারনত দুইটি উদ্দেশ্যে কোয়েল পালন করা হয়ে থাকে।
- ডিম উৎপাদনের জন্য
- মাংস উৎপাদনের জন্য
ডিম উৎপাদনে কোয়েলঃ
আমাদের দেশে প্রধানত ডিম উৎপাদনের জন্যই কোয়েল চাষ করা হয়ে থাকে।তবে পুরুষ পাখি গুলা যেহেতু ডিম দেয় না তাই পুরুষ পাখি মাংস হিসেবে বিক্রি করা হয়ে থাকে।
মাংস উৎপাদনে কোয়েলঃ
কোয়েলের মাংস এখনো আমাদের দেশে অতটা পরিচিত হতে পারে নি।তবে দেশের চট্টগ্রাম,সিলেট,মৌলভীবাজার এলাকায় কোয়েলের মাংস বেশ জনপ্রিয়।তারা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে কোয়েলের রোস্ট পরিবেশন করে।তাই এইসমস্ত এলাকায় যারা আছেন তারা মাংসের জন্য কোয়েল উৎপাদন করতে পারেন।
No comments:
Post a Comment